ঢাকা ১৭ আষাঢ় ১৪৩১, সোমবার, ০১ জুলাই ২০২৪

এমপি আজীম হত্যাকাণ্ড সন্ত্রাসী শিমুল ভূঁইয়া যেভাবে আমানুল্লাহ

প্রকাশ: ২৪ মে ২০২৪, ১১:০২ এএম
আপডেট: ২৪ মে ২০২৪, ১১:২১ এএম
সন্ত্রাসী শিমুল ভূঁইয়া যেভাবে আমানুল্লাহ
শিমুল ভূঁইয়া ওরফে আমানুল্লাহ

ঝিনাইদহ-৪ আসনের এমপি আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যাকাণ্ডে গ্রেপ্তার হওয়া সৈয়দ আমানুল্লাহর বাড়ি খুলনার ফুলতলা উপজেলার দামোদর ইউনিয়নে। গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদে আমানুল্লাহ পরিচয়দানকারী ব্যক্তি পুলিশকে জানিয়েছেন, আনারকে খুনের জন্য আক্তারুজ্জামান ওরফে শাহীনের সঙ্গে তার ৫ কোটি টাকার চুক্তি হয়।

আর এই আমানুল্লাহই হলেন খুলনা অঞ্চলের কুখ্যাত সন্ত্রাসী শিমুল ভূঁইয়া। খুলনার ফুলতলা এলাকায় পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টির (লাল পতাকা) শীর্ষ নেতা শিমুল ভূঁইয়া নামে পরিচিত। তবে এ ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়ার পর পুলিশের কাছে শিমুল ভূঁইয়া নিজেকে সৈয়দ আমানুল্লাহ নামে পরিচয় দেন। তিনি আমানুল্লাহ নামেই পাসপোর্ট বানিয়েছেন, সেই পাসপোর্টে তিনি কলকাতায় গেছেন। ২০১৯ সালের ১০ অক্টোবর ঢাকা থেকে পাসপোর্টটি করা হয়। পাসপোর্ট করতে একই নামে তিনি জাতীয় পরিচয়পত্রও (এনআইডি) তৈরি করিয়েছেন। কীভাবে তিনি শিমুল ভূঁইয়া থেকে আমানুল্লাহ হলেন এবং ভুয়া পাসপোর্ট ও এনআইডি তৈরি করলেন, এখন সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন গোয়েন্দারা।

স্থানীয়রা জানান, ফুলতলার দামোদর হাইস্কুলে পড়ার সময় শিমুল ভূঁইয়ার নাম ছিল ফজল মোহাম্মদ ভূঁইয়া। তার বাবার নাম ছিল নাসির উদ্দিন ভূঁইয়া। পরবর্তী সময়ে অসংখ্য হত্যাকাণ্ডে নাম জড়িয়ে যাওয়ায় ধূম্রজাল তৈরি করে তিনি ২০১৯ সালে ঢাকা থেকে সৈয়দ আমানুল্লাহ নামে পাসপোর্টটি করেন। সেই পাসপোর্টে তিনি ভারতের কলকাতায় গিয়েছিলেন। শিমুলের ভাই শিপলু ভূঁইয়া স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হওয়ায় তিনি ভুয়া তথ্য দিয়ে নাম পরিবর্তন, এনআইডি ও পাসপোর্ট তৈরিতে সহায়তা করেন।

তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, কলকাতার নিউ টাউনের ভাড়া করা ফ্ল্যাটে সংসদ সদস্যকে খুন করে ১৫ মে দেশে ফেরেন আমানুল্লাহ পরিচয় দেওয়া শিমুল ভূঁইয়া। পরে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি স্বীকার করেন আনোয়ারুলকে তারা হত্যা করেছেন। আনারকে হত্যার জন্য আনোয়ারুলের বন্ধু যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক আক্তারুজ্জামান ওরফে শাহীনের সঙ্গে তার চুক্তি হয়। আনোয়ারুলের সঙ্গে আক্তারুজ্জামানের স্বর্ণ চোরাচালান ও হুন্ডির ব্যবসা নিয়ে দ্বন্দ্ব ছিল বলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তথ্য পাচ্ছে।

পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদ ও অন্যান্য সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, আনোয়ারুল আজীমকে খুনের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন সৈয়দ আমানুল্লাহ নামে পরিচয়দানকারী শিমুল ভূঁইয়া।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সূত্র বলছে, শিমুল ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে খুনসহ অন্তত দুই ডজন মামলা আছে। গণেশ নামের এক ব্যক্তিকে খুন করে যশোরের অভয়নগর থানার এক মামলায় আমানুল্লাহ সাত বছর (১৯৯১-৯৭) জেল খাটেন। ইমান আলী নামের এক ব্যক্তিকে খুনের ঘটনায় ২০০০ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত জেল খাটেন।

এদিকে ২০০০ সালে শিমুল ভূঁইয়া পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হলে জবানবন্দিতে চরমপন্থি দলের অস্ত্র কোথায় কার কাছে রয়েছে জানান। এর মধ্যে খুলনার ওয়ার্ড কমিশনার যুবলীগ নেতা এস এম আসাদুজ্জামান লিটুর নাম ছিল। বিষয়টি নিয়ে পত্রপত্রিকায় প্রতিবেদন ছাপা হলে ক্ষিপ্ত হন লিটু। পরে ২০০০ সালের ১৬ জুলাই সাংবাদিক শামছুর রহমানকে তার যশোরের অফিসে ঢুকে হত্যা করা হয়। সেই হত্যা মামলায় লিটু আসামি ছিলেন। ২০০৪ সালের ২৪ আগস্ট ক্রসফায়ারে লিটু মারা যান। ২০১৩ সালে কারাগার থেকে মুক্তি পান আমানুল্লাহ ওরফে শিমুল ভূঁইয়া।

অন্যদিকে ছদ্মবেশী খুনি শিমুল ভূঁইয়ার স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমীন খুলনা জেলা পরিষদ সদস্য হিসেবে দায়িত্বরত। ২০১৭ সালের ২৫ মে নিজ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে খুন হন ফুলতলা উপজেলা চেয়ারম্যান সরদার আলাউদ্দিন মিঠু। ২০১৮ সালে শিমুল ভূঁইয়াকে তালিকায় প্রথম ও তার স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমীনকে চতুর্থ নম্বরে অভিযুক্ত করে পুলিশ আদালতে চার্জশিট দেয়। কিন্তু পুলিশের খাতায় দীর্ঘদিন পলাতক থাকার পর সর্বশেষ ২০২২ সালে খুলনা জেলা পরিষদ নির্বাচনে সাবিনা ইয়াসমীন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সদস্য নির্বাচিত হন। 

জিজ্ঞাসাবাদ-সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, এই খুনের বিভিন্ন পর্যায়ে চরমপন্থি সংগঠনগুলোর সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যক্তিরা রয়েছেন। শিমুল ভূঁইয়াকে যিনি ভাড়া করেছেন, সেই আক্তারুজ্জামান ওরফে শাহীন পূর্ব বাংলার কমিউনিস্ট পার্টির (এমএল-লাল পতাকা) শীর্ষ নেতা ডা. মিজানুর রহমান ওরফে টুটুলের আত্মীয়। মিজানুর রহমান ২০০৮ সালে পুলিশের সঙ্গে এক ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন।

খুলনায় খোঁজ নিয়ে আরও জানা যায়, আক্তারুজ্জামান ওরফে শাহীন ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার এলাঙ্গী গ্রামের মো. আসাদুজ্জামান কাটু মিয়ার ছোট ছেলে। তাদের বাড়ি কোটচাঁদপুর শহরের মাছবাজার এলাকায়। তার বড় ভাই মো. সহিদুজ্জামান ওরফে সেলিম কোটচাঁদপুর পৌরসভার মেয়র। আক্তারুজ্জামান মেরিন ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন। কিছুদিন চাকরি করে চাকরি ছেড়ে দেন। এরপর তিনি ব্যবসা শুরু করেন। তবে এলাকার কেউ তার ব্যবসা সম্পর্কে পরিষ্কার কিছু জানেন না।

আমানুল্লাহর পরিবার লাপাত্তা

গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে ফুলতলার দামোদর এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, গ্রেপ্তার হওয়া আমানুল্লাহ ওরফে শিমুল ভূঁইয়া ও তার ভাইপো তানভীর ভূঁইয়ার বাড়ি তালাবদ্ধ। শিমুল ভূঁইয়ার ভাই স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শিপলু ভূঁইয়ার বাড়িও লোকশূন্য। আমানুল্লাহ যশোরের অভয়নগরে চরমপন্থি গণেশ হত্যা মামলায় সাত বছর (১৯৯১-৯৭) ও ইমান আলী হত্যা মামলায় ১৩ বছর (২০০০-১৩) জেল খাটেন।

আ.লীগ নেতা হত্যায় মূল পরিকল্পনাকারীসহ গ্রেপ্তার ৪

প্রকাশ: ০১ জুলাই ২০২৪, ০৯:৩৪ এএম
আপডেট: ০১ জুলাই ২০২৪, ০৯:৫০ এএম
আ.লীগ নেতা হত্যায় মূল পরিকল্পনাকারীসহ গ্রেপ্তার ৪

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার আলীপাড়া এলাকায় দিন-দুপুরে প্রকাশ্যে আওয়ামী লীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা ঘটনায় মূল পরিকল্পনারকারী আলাউদ্দিন ওরফে হীরাসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। গত শনিবার রাতে নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুরে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। 

রবিবার (৩০ জুন) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ আদমজী র‌্যাব কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব-১১-এর অধিনায়ক তানভীর আহাম্মেদ পাশা এ তথ্য জানান। গ্রেপ্তাররা হলেন হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী আলাউদ্দিন ওরফে  হীরা (৩৫), আল আমিন (২২), রাসেল (২০) ও সানি (২৯)। নিহত সুরুজ মেম্বার ফতুল্লার কাশিপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের অর্থ সম্পাদক ছিলেন।

র‌্যাব জানায়, নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার  কাশিপুরের গেদ্দার বাজার আলীপাড়া এলাকায় ইট-বালুর ব্যবসার নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে সালাউদ্দিন সালু ও আলাউদ্দিন ওরফে হীরার সঙ্গে নিহত সুরুজ আলী মেম্বারের ছেলে মুন্না আহমেদের দীর্ঘ দিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। ওই বিরোধের জেরে গত বৃহস্পতিবার দুপুরে সালাউদ্দিন সালুর লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আগে থেকেই আলীপাড়া মসজিদের সামনে ওত পেতে থাকেন। মুন্না আহমেদের বাবা সুরুজ আলী জোহরের নামাজ পড়ার জন্য মসজিদের সামনে এলে সন্ত্রাসীরা সুরুজ আলীকে কুপিয়ে গুরুতর আহত অবস্থায় ফেলে রাখেন। খবর পেয়ে নিহতের স্বজনরা এগিয়ে এলে সন্ত্রাসীরা তাদেরও কুপিয়ে আহত করেন। গুরুতর আহত অবস্থায় সুরুজ আলীসহ আহতদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সুরুজ আলীকে মৃত ঘোষণা করেন। 

হত্যার ঘটনায় নিহতের ছেলে মুন্না আহমেদ বাদী হয়ে ২১ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ১০-১২ জনকে আসামি করে ফতুল্লা থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।

পরীক্ষায় সুযোগ দেওয়ার নামে অধ্যক্ষের প্রতারণা!

প্রকাশ: ৩০ জুন ২০২৪, ০৯:১২ পিএম
আপডেট: ৩০ জুন ২০২৪, ০৯:১২ পিএম
পরীক্ষায় সুযোগ দেওয়ার নামে অধ্যক্ষের প্রতারণা!
ঢাকা পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ

টেস্ট পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ ছয় শিক্ষার্থীকে মূল পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ করে দেওয়ার আশ্বাসে প্রায় চার লাখ টাকা নিয়েছিলেন ঢাকা পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ আলমগীর কবির। 

তবে রবিবার (৩০ জুন) এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হলেও ওই শিক্ষার্থীরা প্রবেশপত্র না পাওয়ায় পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা জানান, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল স্কুল এবং স্কলারস স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে চলতি বছরের এইচএসসি পরীক্ষা দেওয়ার জন্য টেস্ট পরীক্ষায় অংশ নেয় ওই শিক্ষার্থীরা। কিন্তু সেখানে কেউ একাধিক আর কেউ এক বিষয়ে পাস করতে পারেনি। সে কারণে নিয়মানুযায়ী কলেজ কর্তৃপক্ষ তাদের ফরম ফিলাপ করেনি। পরে একজন শিক্ষকের পরামর্শে তারা ঢাকা পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ আলমগীর কবিরের সঙ্গে যোগাযোগ করে। তিনি তাদের জনপ্রতি ৬৫ হাজার টাকার বিনিময়ে বোর্ডের মাধ্যমে পরীক্ষায় অংশগ্রহণের ব্যবস্থা নেবেন বলে আশ্বাস দেন। কিন্তু পরীক্ষার আগের দিন পর্যন্ত অভিভাবকরা প্রবেশপত্রের জন্য যোগাযোগ করলেও আলমগীর কবির সাড়া দেননি।

পরীক্ষার্থী ইফতেখার হোসেন রিজভীর অভিভাবক খবরের কাগজকে বলেন, ‘আমার ছেলে গণিতে ফেল করেছিল। রেজা স্যারের কথা অনুযায়ী আমরা এখানে এলে প্রিন্সিপাল বলেন তিনি সব করে দেবেন। ৬৫ হাজার টাকা করে দিতে হবে। আমি অনেক কষ্টে টাকা জোগাড় করে দিয়েছি। কিন্তু এখন তো আমার ছেলে পরীক্ষা দিতে পারল না। প্রিন্সিপালও ফোন ধরেন না। কলেজে গিয়েও কাউকে পাইনি।’

আরেক অভিভাবক শাহীরুল ইসলাম খবরের কাগজকে বলেন, ‘আমি অধ্যক্ষকে ক্যাশ এবং বিকাশের মাধ্যমে ৬৫ হাজার টাকা দিয়েছি। কিন্তু তারপরেও আমার চাচাতো ভাই পরীক্ষার প্রবেশপত্র পায়নি।’

অভিযোগের বিষয়ে অধ্যক্ষ আলমগীর কবিরের বক্তব্য জানতে তার দুটি মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।

এমপি আনার হত্যাকাণ্ড: গ্রেপ্তার জিহাদ ছিনতাই-ডাকাতি করতেন ঢাকায়

প্রকাশ: ৩০ জুন ২০২৪, ১২:০৫ পিএম
আপডেট: ৩০ জুন ২০২৪, ১২:০৫ পিএম
এমপি আনার হত্যাকাণ্ড: গ্রেপ্তার জিহাদ ছিনতাই-ডাকাতি করতেন ঢাকায়
জিহাদ হাওলাদার

ঝিনাইদহ-৪ আসনের এমপি আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যা মিশনে অংশ নেওয়া জিহাদ হাওলাদারের বাড়ি খুলনার দিঘলিয়ার বারাকপুর গ্রামে। স্কুলের গণ্ডি পেরোনোর আগেই লেখাপড়া ছেড়ে বাবা জয়নাল হাওলাদারের সঙ্গে রংমিস্ত্রির কাজ শুরু করেন। 

একপর্যায় দুটি মারামারির মামলায় জড়িয়ে পড়ে গা ঢাকা দেন। আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় আমানুল্লাহ সাঈদ ওরফে শিমুল ভূঁইয়ার সঙ্গে খুলনায় একটি রাজনৈতিক সমাবেশে পরিচয় হয় তার।

গোয়েন্দা সূত্রে জানা যায়, এলাকা ছাড়ার পর জিহাদ ঢাকায় একটি বস্তিতে থাকতেন এবং ছিনতাই-ডাকাতি করতেন। তার নামে ঢাকার বিভিন্ন থানায় চুরি-ছিনতাই ও ডাকাতির মামলা রয়েছে। 

গোয়েন্দারা জানান, কয়েক বছর আগে ঢাকায় সিরিজ ডাকাতির ঘটনায় ডিবির তেজগাঁও বিভাগের হাতে গ্রেপ্তার হন। এই মামলা থেকে শিমুলের মাধ্যমে জামিন নিয়ে দেশ ছাড়েন। শিমুল ভূঁইয়ার হাত ধরেই জড়িয়ে পড়েন অপরাধে।

ডিবির এক কর্মকর্তা বলেন, জিহাদের বিরুদ্ধে খুলনার দিঘলিয়া থানায় ২০২৩ সালে একটি মামলা হয়। এর আগে ২০২০ সালে এলাকায় মারামারির দুটি ঘটনায় দুই মামলায় আসামি হন। মারামারির ঘটনায় মামলায় ৮ মাস জেলও খেটেছেন তিনি।

মামলার তদন্ত তদারকসংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই হত্যাকাণ্ডে জড়ানোর বহু আগে থেকে শিমুলের সঙ্গে জিহাদের পরিচয়। ভারতে শিমুলের আশ্রয়েই থাকতেন তিনি। ভারতীয় পুলিশকে হত্যার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন জিহাদ। আনার হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার ৯ জনের মধ্যে ৫ জন খুলনার। 

এ ছাড়া একজন টাঙ্গাইলের, একজন ভোলার ও দুজন ঝিনাইদহের রাজনৈতিক নেতা।

দিঘলিয়া উপজেলার বারাকপুর বাজারের পাশে টিনশেডের বাড়িতে থাকে জিহাদের পরিবার। তার ছোট ভাই জায়েদ বারাকপুর এলাকার আনসার হত্যা মামলার আসামি। জিহাদ ঢাকা ও যশোরের দুটি মামলায় জড়িয়ে পড়ে গা ঢাকা দেন বলে জানান তার স্ত্রী মুন্নি বেগম। বাড়ি ছাড়ার পর থেকে তার কোনো খোঁজ নেই। এর মধ্যে এক দিন তার খোঁজে যশোর থেকে ডিবি পুলিশ বাড়িতে এসেছিল। 

সর্বশেষ ৯ মাস আগে ফোন করে এক-দেড় মিনিট কথা বলে শিশুসন্তান ও মা-বাবার খোঁজখবর নেন জিহাদ। এ সময় জিহাদ তার অবস্থান সম্পর্কে কিছুই জানাননি।

কক্সবাজারে ২ জেলে হত্যা: এক মাসেও রহস্যভেদ করতে পারেনি পুলিশ

প্রকাশ: ৩০ জুন ২০২৪, ০৮:৫৬ এএম
আপডেট: ৩০ জুন ২০২৪, ১০:০৪ এএম
কক্সবাজারে ২ জেলে হত্যা: এক মাসেও রহস্যভেদ করতে পারেনি পুলিশ
গণমাধ্যমকর্মীদের দেখে এভাবেই আহাজারি করছিলেন নিহত ইয়াছিনের মা/ খবরের কাগজ

কক্সবাজারে চুরির অপবাদে দুই জেলেকে ধরে রাতভর পিটিয়ে এবং বৈদ্যুতিক শক লাগিয়ে হত্যা মামলার এক মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো কোনো কুলকিনারা হয়নি। উল্টো আসামি পক্ষের নির্যাতনের ভয়ে নিহতের স্বজনরা পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। এ ছাড়া সমঝোতার মাধ্যমে মামলা প্রত্যাহারের জন্য প্রভাবশালী মহল থেকে চাপ দেওয়া হচ্ছে বলে দাবি জেলে পরিবারগুলোর। তবে পুলিশ বলছে, মামলার রহস্য উদ্ঘাটনে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।

সরেজমিনে ঘুরে জানা গেছে, সদর উপজেলার খুরুশকুল ইউনিয়নের মনুপাড়ার আব্দুল খালেক ও কুলছুম নাহারের ছেলে ইয়াছিন আরাফাতকে হারিয়েছেন এক মাস পার হয়েছে। ছেলে হত্যার বিচার চেয়ে প্রতিদিনই আহাজারি করছেন তারা। গেল ১৭ মে আশ্রয়ণ প্রকল্পসংলগ্ন মৎস্য ঘের থেকে আব্দুল খালেক ও ইয়াছিন আরাফাতের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তারা দুজনই ছিলেন জেলে। এরপর ১৯ মে, চুরির অপবাদে দুই জেলেকে ধরে নিয়ে রাতভর পিটিয়ে ও বৈদ্যুতিক শক লাগিয়ে হত্যার অভিযোগে ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন নিহত আব্দুল খালেকের বড় ভাই আবদুল মজিদ।

নিহত ইয়াছিন আরাফাতের মা কুলছুম নাহার খবরের কাগজকে বলেন, ‘আমার ছেলেই ছিল পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। ওকে হারিয়ে আমরা এখন দিশেহারা। আসামিরাও পাল্টা মামলা করেছে। আমরা এখন পালিয়ে আছি। বেঁচে থাকাই এখন কঠিন হয়ে পড়েছে।’

আরাফাতের স্বজন মোহাম্মদ আব্দুল ওয়াহাব বলেন, ‘চুরির শাস্তি কখনো মৃত্যু হতে পারে না। যদি তারা চুরি করে থাকত, বিচার করা যেত। দেশে আইন আদালত আছে। এভাবে পিটিয়ে মারার তো দরকার ছিল না। হত্যাকারীর শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।’ 

মামলার বাদী আব্দুল মজিদ খবরের কাগজকে বলেন, ‘এক মাস পার হয়ে গেছে। এখনো পুলিশ এ ঘটনার কোনো রহস্য উদঘাটন করতে পারেনি। তাদের তদন্ত নিয়েও ধোঁয়াশা রয়েছে। আমাদের দাবি, এমন প্রতিবেদন দেওয়া হোক যেন আসামিরা সর্বোচ্চ শাস্তি পায়।’  

এদিকে দুই জেলের লাশ উদ্ধারের ঘটনার দিন ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী আসামিদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাংচুর করে। এ নিয়ে বাদীপক্ষের বিরুদ্ধে আসামিপক্ষের স্বজনরা আদালতে ভাংচুরের মামলা করেন। তবে মামলা প্রত্যাহারে হুমকি দেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে আসামিপক্ষের দাবি, তাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।

দুই জেলে হত্যা মামলার আসামি মোরশেদ আলম ওরফে কাজল বলেন, ‘কী কারণে আমাদের পরিবারের তিনজনকে আসামি করা হয়েছে তা আমাদের বোধগম্য নয়। আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।’ 

তবে পুলিশ বলছে, হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন এবং আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মিজানুর রহমান বলেন, দুই জেলে হত্যাকাণ্ডে মামলা হওয়ার পর দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান অব্যাহত রেখেছে। একই সঙ্গে হত্যার কারণ অনুসন্ধান চালাচ্ছে পুলিশ।

খিলক্ষেতে স্বামীর সঙ্গে ঘুরতে যাওয়া নববধূকে গণধর্ষণ, গ্রেপ্তার ৭

প্রকাশ: ২৯ জুন ২০২৪, ১০:৫২ পিএম
আপডেট: ৩০ জুন ২০২৪, ০৯:১১ এএম
খিলক্ষেতে স্বামীর সঙ্গে ঘুরতে যাওয়া নববধূকে গণধর্ষণ, গ্রেপ্তার ৭
খবরের কাগজ গ্রাফিকস

রাজধানীর খিলক্ষেতে স্বামীর কাছ থেকে নববধূকে ছিনিয়ে নিয়ে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারদের মধ্যে ওই নববধূর সাবেক প্রেমিকও ছিলেন বলে জানা গেছে।

শুক্রবার (২৮ জুন) রাতে খিলক্ষেতের বনরূপা এলাকায় এ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। পরে অভিযোগের ভিত্তিতে সাতজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন— আবুল কাশেম সুমন, পার্থ, হিমেল, রবিন, টুটুল, হৃদয় ও নুরু। এর মধ্যে আবুল কাশেম সুমন ওই নববধূর সাবেক প্রেমিক।

পুলিশ জানিয়েছে, ভুক্তভোগী ওই নববধূ অঙ্গীভূত আনসার সদস্য।

থানা-পুলিশ ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার রাতে খিলক্ষেতের এক আত্মীয়ের বাসা থেকে ওই নববধূ ও তার স্বামী বিমানবন্দর এলাকায় ঘুরতে আসছিলেন। পথিমধ্যে বনরূপা এলাকায় সুমনসহ ছয়জন তাদের ধরে নিয়ে ঝোপের আড়ালে যান। সেখানে তাদের মারধর করে ৩ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। 

একপর্যায়ে ওই নববধূর স্বামীকে মুক্তিপণের টাকা নিয়ে আসার জন্য ছেড়ে দেওয়া হয়। ছাড়া পেয়ে স্বামী জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে কল দেন। পরে খিলক্ষেত থানার টহল পুলিশ তাকে নিয়ে নববধূকে উদ্ধারে নামে।

এদিকে, সুমন ও তার সহযোগীরা নববধূকে শারীরিক নির্যাতন করতে থাকেন। চিৎকার করেও কোনো লাভ হয়নি। তাকে পালাক্রমে ধর্ষণ করেন তারা।

অন্যদিকে ভুক্তভোগীর স্বামীকে নিয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে টের পেয়ে অভিযুক্তরা পালিয়ে যান। পুলিশ নববধূকে উদ্ধার করে। ওই নারীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে ডিএমপির ক্যান্টনমেন্ট জোনের সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) শেখ মুত্তাজুল ইসলাম বলেন, নববধূকে স্বামীর কাছ থেকে অপহরণ করে নিয়ে ধর্ষণের ঘটনায় খিলক্ষেত থানায় ‘অপহরণ করে ধর্ষণ’ অভিযোগে একটি মামলা হয়েছে। সেই সঙ্গে ঘটনার পর থেকে খিলক্ষেত থানার একাধিক টিম আজ দুপুর পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে মূলহোতা সুমনসহ সাতজনকে গ্রেপ্তার করে।

খাজা/এমএ/