![কারাগারে মারা গেলেন রাশিয়ার বিরোধী নেতা নাভালনি](uploads/2024/02/16/1708097356.navalni.jpg)
রাশিয়ার বিরোধীদলীয় নেতা ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সমালোচক অ্যালেক্সেই নাভালনি মারা গেছেন। ৪৭ বছর বয়সী এ রাজনীতিবিদকে ধরা হতো গত দশকের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিরোধীদলীয় নেতা হিসেবে।
মৃত্যুর সময় তিনি সুমেরু বৃত্ত এলাকার এক কারাগারে বন্দি ছিলেন। বিভিন্ন অভিযোগে তার ১৯ বছর কারাদণ্ড হয়েছিল। অনেকের মতে, সেসব অভিযোগ ছিল রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
গত বছর তাকে সুমেরু অঞ্চলের কারাগারে স্থানান্তর করা হয়। বলা হয়, ওই কারাগার রাশিয়ার সবচেয়ে কঠিন কারাগারগুলোর মধ্যে একটি।
ইয়ামালো-নেনেটস অঞ্চলের ওই কারাগার কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, শুক্রবার হাঁটাহাঁটির পর নাভালনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। তিনি তাৎক্ষণিকভাবেই অজ্ঞান হয়ে যান। তাকে বাঁচানোর জন্য জরুরি সেবা দল ডাকা হয়। কিন্তু তার জ্ঞান ফিরিয়ে আনতে ব্যর্থ হন তারা।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, জরুরি সেবার ডাক্তাররা বন্দিকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
নাভালনির আইনজীবী লিওনিদ সলোভিয়ভ রাশিয়ার গণমাধ্যমকে জানান, তিনি এখনই কোনো মন্তব্য করবেন না। তার ঘনিষ্ঠ সহকারী লিওনিদ ভলকোভ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) লিখেছেন, রাশিয়ার কর্তৃপক্ষ নাভালনিকে কারাগারে হত্যা করেছে।
পশ্চিমা মহলের প্রতিক্রিয়া
কারা কর্তৃপক্ষ নাভালনির মৃত্যুর খবর জানানোর কয়েক মিনিটের মধ্যে আন্তর্জাতিক মহল তার সাহসের প্রশংসা করে দুঃখ প্রকাশ করে। ফ্রান্স জানিয়েছে, রাশিয়ার ‘শোষণ’ ঠেকানোর মূল্য তিনি জীবন দিয়ে শোধ করেছেন।
নরওয়ের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসপেন বার্থ আইড জানান, তার (নাভালনির) মৃত্যুর গুরুতর দায় রুশ কর্তৃপক্ষের ওপরও বর্তায়। পুতিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ জানিয়েছেন, নাভালনির মৃত্যুর ব্যাপারে রুশ প্রেসিডেন্টকে অবহিত করা হয়েছে। তিনি চেলায়াবিনস্ক সফরে রয়েছেন।
রুশ প্রেসিডেন্টের বেশির ভাগ সমালোচকই রাশিয়া থেকে পালিয়েছেন। তবে অ্যালেক্সেই নাভালনি কয়েক মাসের চিকিৎসার পর ২০২১ সালের জানুয়ারিতে ফিরে যান। ২০২০ সালে সার্বিয়া সফরের সময় তাকে নভিচক নার্ভ এজেন্ট দিয়ে বিষপ্রয়োগ করা হয়েছিল।
নাভালনির দল তাকে সফলভাবে বিশেষ চিকিৎসার জন্য জার্মানিতে নিয়ে যান। পরে তিনি মস্কোতে ফেরার সঙ্গে সঙ্গে গ্রেপ্তার হন। এরপর ৩৭ মাস কারাগারেই কেটেছে নাভালনির। রাশিয়ার এ বিরোধীদলীয় নেতা পুতিনের বিরুদ্ধে ভোটেও দাঁড়াতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাকে ২০১৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দাঁড়াতে দেওয়া হয়নি।
চলতি বছরের মার্চে রাশিয়ায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এবারের নির্বাচনে পুতিনের সেরকম অর্থে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী নেই। যুদ্ধবিরোধী প্রার্থী বরিস নাদেঝদিনকে নির্বাচনে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, বরিস নাদেঝদিনের পক্ষে জমা পড়া হাজারও স্বাক্ষরে অনিয়ম পাওয়া গেছে। সূত্র: বিবিসি
এমএ/