![রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট শুরু শুক্রবার](uploads/2024/03/14/1710429727.Russia_President_Election.jpg)
ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধ চলা অবস্থাতেই রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে শুক্রবার (১৫ মার্চ) থেকে ভোট গ্রহণ শুরু হচ্ছে। চলবে ১৭ মার্চ পর্যন্ত। এর আগে এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সবাইকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবারের নির্বাচনেও প্রার্থী হয়েছেন। নির্বাচনে জয়ী হলে পঞ্চমবারের মতো প্রেসিডেন্ট হবেন তিনি এবং সে ক্ষেত্রে তার ক্ষমতার মেয়াদ ২০৩০ সাল পর্যন্ত বাড়বে। সেই সঙ্গে রাশিয়ার সবচেয়ে দীর্ঘ সময় ধরে প্রেসিডেন্ট পদে থাকার রেকর্ডও তার হয়ে যাবে। বর্তমানে সবচেয়ে দীর্ঘ সময় রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পদে থাকার রেকর্ডের মালিক জোসেফ স্তালিন এবং লিওনিদ ব্রেজনেভ। সাবেক সোভিয়েত আমলে দুজনেই ২৪ বছর করে ক্ষমতায় ছিলেন। ইউনাইটেড রাশিয়া পার্টির প্রার্থী ৭১ বছর বয়সী পুতিন যদি ২০৩০ সাল পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট থাকতে পারেন, তাহলে তার ক্ষমতার মোট মেয়াদকাল পৌঁছাবে ৩০ বছরে।
রুশ কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে তাদের নির্বাচনি ব্যবস্থা বেশ কার্যকর। যদিও পশ্চিমা গণমাধ্যমগুলো বলছে, এই তথাকথিত নির্বাচনে আবারও ছয় বছরের জন্য ক্ষমতা পাকাপোক্ত করতে যাচ্ছেন পুতিন। কিছুদিন আগেই কারাগারে মৃত্যু হয়েছে পুতিনবিরোধী নেতা অ্যালেক্সেই নাভালনির। ফলে এই নির্বাচন থেকে তেমন কিছুই আশা করছে না বিরোধী দলগুলো।
ভ্লাদিমির পুতিনের প্রতিদ্বন্দ্বী যারা
সোভিয়েত ইউনিয়নের পর রাশিয়ার ইতিহাসে সবচেয়ে প্রভাবশালী রাষ্ট্রপ্রধান পুতিনকে এবারের নির্বাচনে লড়তে হবে মূলত রুশ কমিউনিস্ট পার্টির নেতা নিকোলাই খারিতোনভ, ন্যাশনালিস্ট লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির নেতা লিওনিদ স্লাতস্কি এবং নিউ পিপল পার্টির ভ্লাদিস্লাভ দাভানকোভের বিরুদ্ধে। তবে প্রধান এই বিরোধী তিন প্রার্থীর কেউই পুতিনের কট্টর সমালোচক নন। এমনকি এদের কেউ ইউক্রেন যুদ্ধের বিরোধিতাও করেননি। যুদ্ধবিরোধী প্রার্থী বরিস নাদেজদিনকে নির্বাচনে অংশ নিতে বাধা দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের গোয়েন্দা সংস্থা কেজিপির লেফটেন্যান্ট কর্নেল পুতিন প্রথম রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট হন ১৯৯৯ সালে। তৎকালীন রুশ প্রেসিডেন্ট বরিস ইয়েলৎসিন ১৯৯৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর পুতিনের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে পদত্যাগ করেছিলেন। পরে ২০০০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ৫৩ শতাংশ ভোট পেয়ে প্রথমবারের মতো প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জেতেন পুতিন। ২০০৪ সালের নির্বাচনে ৭১ দশমিক ৩ শতাংশ ভোট পেয়ে ফের প্রেসিডেন্ট হন। যুক্তরাষ্ট্রের মতো রাশিয়ার সংবিধানেও কোনো ব্যক্তি দুই মেয়াদের বেশি প্রেসিডেন্ট পদে থাকার অনুমতি ছিল না। তাই ২০০৮ সালের নির্বাচনে নিজের বিশ্বস্ত অনুসারী দিমিত্রি মেদভেদেভকে তিনি প্রার্থী হিসেবে দাঁড় করান এবং নিজে প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী হন। সেই নির্বাচনে মেদভেদেভ এবং পুতিন উভয়ই জয়ী হয়েছিলেন।
২০১২ সালে ফের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হন পুতিন এবং ৬২ দশমিক ৬ শতাংশ ভোট পেয়ে সেই নির্বাচনে জেতেন। সেবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জিতে সংবিধানে পরিবর্তন আনেন তিনি। প্রেসিডেন্টের মেয়াদকাল ৪ বছর থেকে ৬ বছরে উন্নীত করেন এবং দুই বারের বেশি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থিতা না করার যে বাধ্যবাধকতা ছিল তা বাতিল করেন। সর্বশেষ ২০১৮ সালের নির্বাচনে ৬৭ দশমিক ৫ শতাংশ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছিলেন পুতিন। সেই নির্বাচনে জয়ী হয়ে ঘোষণা করেছিলেন, ২০২৪ সালের নির্বাচনে আর প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন না তিনি।
তবে তার দল ইউনাইটড রাশিয়া পার্টির নেতারা জানিয়েছেন, পরিবর্তিত পরিস্থিতির কারণে তার সেই সিদ্ধান্তে বদল এসেছে। সূত্র: রয়টার্স, বিবিসি