![আজিজের ভাইদের এনআইডি জালিয়াতি, জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করবে ইসি](uploads/2024/06/26/EC-1719417147.jpg)
সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদের দুই ভাইয়ের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) জালিয়াতির ঘটনায় জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব শফিউল আজিম।
বুধবার (২৬ জুন) নির্বাচন ভবনে পাঁচ পৌরসভার বিভিন্ন পদে নির্বাচন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
ইসিসচিব বলেন, ‘ঘটনা তদন্তে গঠিত কমিটি কাজ করছে। ওই কমিটিতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন ইসির এক যুগ্ম সচিব। তদন্ত কার্যক্রমে জালিয়াতির শুরু কীভাবে হলো, তারা (অভিযুক্তরা) প্রথমে কীভাবে ভোটার হয়েছিলেন, কোন কোন তথ্যগুলো এখানে এসেছে, কোথায় ওলট-পালট হলো, সবই খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আমরা বিস্তারিত ও নিখুঁতভাবে তদন্তটা করতে চাই, যাতে কোনো ধরনের ফাঁকফোকর না থাকে। তদন্ত কমিটি ওপর আমাদের আস্থা আছে। তারা আরও দুই সপ্তাহ সময় চেয়েছে। কারণ আজিজ আহমেদের ভাইয়েরা শুরু থেকে এ পর্যন্ত অনেক ডকুমেন্ট জমা দিয়েছিলেন। সব ডকুমেন্ট জোগাড় করা, পরীক্ষা করা, সোর্সে গিয়ে এগুলো আবার ভেরিফাই করা। আমরা চাচ্ছি সময় লাগলে লাগুক, তদন্তে যাতে কোনো ধরনের খুঁত না থাকে। একটু অপেক্ষা করুন, আমরা নিখুঁত ও পূর্ণাঙ্গ তদন্ত রিপোর্ট উত্থাপন করব।’
সন্দেহের আওতায় ইসির কর্মকর্তারা বা তাদের যোগসাজশ আছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে ইসিসচিব বলেন, ‘যেই থাকুক, কেউ সন্দেহের ঊর্ধ্বে নয়। আবার এটা তদন্তেই প্রমাণ করতে হবে। এতটুকু কথা দিতে পারি, এ ঘটনায় যাদের বিন্দুমাত্র সম্পৃক্ততা থাকবে, তাদের সর্বোচ্চ আইনি শাস্তি নিশ্চিত করা হবে।’
আজিজ আহমেদের দুই ভাই- হারিছ আহমেদ ও তোফায়েল আহমেদ (জোসেফ) নিজেদের নামের পাশাপাশি বাবা-মায়ের নামও পরিবর্তন করেছেন। হারিছ আহমেদ নাম পরিবর্তন করে হয়েছেন মোহাম্মদ হাসান। আর জোসেফ নাম পরিবর্তন করে হয়েছেন তানভীর আহমেদ তানজীল। তাদের এনআইডির তথ্য পরিবর্তনে আজিজ আহমেদ সুপারিশ করেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
এ ছাড়া জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মস্বীকৃত খুনি রিসালদার মোসলেম উদ্দিনের সন্তানদের এনআইডিতে পিতার নাম পরিবর্তন করার বিষয়ে ইসিসচিব বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের পর বিভিন্ন নামে তিনি আত্মগোপনে ছিলেন। বিভিন্ন নাম ধারণ করেছেন বলে আমাদের তদন্তে বেরিয়ে এসেছে। কোথায় কোথায় তিনি ছিলেন, কী কী কাজে সেই নামগুলো ব্যবহার করেছেন, তার আত্মীয়স্বজনরা এটা কোথায় কোথায় ব্যবহার করেছেন, সব তথ্য জোগাড়ের প্রক্রিয়া চলছে। তদন্ত কমিটির কাজ অব্যাহত রয়েছে। সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে এসব ঘটনা তদন্ত করা হচ্ছে।’
বুধবার দেশের পাঁচ পৌরসভার বিভিন্ন পদে নির্বাচন প্রসঙ্গে ইসিসচিব বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জের কাঞ্চন পৌরসভায় সাধারণ নির্বাচনে ৭২ শতাংশ ভোট পড়েছে। এখানে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট হয়েছে। এতে প্রমাণ হয়, ইভিএমে আস্থা বাড়ায় ভোটারদের অংশগ্রহণ বেড়েছে। একই দিন বরিশালের গৌরনদীতে মেয়র পদে উপনির্বাচন, রাজবাড়ীর পাংশা, জামালপুরের মেলান্দহ ও শেরপুরের নকলা পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডের উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে গৌরনদীতে ৪২ দশমিক ২৩ শতাংশ, পাংশায় ৩৫ দশমিক ২৪ শতাংশ, মেলান্দহে ৬৯ দশমিক ৬৩ শতাংশ ও নকলায় ৬৯ দশমিক ২৫ শতাংশ ভোট পড়েছে। সব কটিতেই ইভিএমে ভোট হয়েছে।’
ইসিসচিব আরও জানান, নির্বাচনের পরিবেশ শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর ছিল। বড় ধরনের কোনো সহিংস ঘটনা ঘটেনি। শুধু গৌরনদীতে ঘুষ দেওয়ার চেষ্টার ঘটনায় হাতেনাতে ধরা পড়া একজন প্রিসাইডিং অফিসার, আরও দুজন সহকারী প্রিসাইডিং অফিসারকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তদন্তে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ হলে রিটার্নিং কর্মকর্তাকে মামলা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।