![মনোহরদীতে গ্রাহকদের কোটি টাকা নিয়ে উধাও এনজিও জিডিএস](uploads/2024/02/15/1707978111.ngo.jpg)
নরসিংদীর মনোহরদীতে ঋণ দেওয়ার কথা বলে গ্রামীণ ডেভেলপমেন্ট সার্ভিসেস (জিডিএস) নামে একটি বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) প্রায় কোটি নিয়ে উধাও হয়ে গেছে বলে অভিযোগ করেছেন গ্রাহকরা।
বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বিষয়টি খবরের কাগজকে নিশ্চিত করেছেন মনোহরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবুল কাশেম ভূঁইয়া।
ওসি বলেন, ‘মনোহরদী ও পার্শ্ববর্তী কাপাসিয়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকার তিন শতাধিক গ্রাহকের সঙ্গে প্রতারণা করে কোটি টাকা নিয়ে পালিয়েছে এনজিওটি। এ বিষয়ে মনোহরদী থানায় ভুক্তভোগী একাধিক গ্রাহক অভিযোগ করেছেন।’
ভুক্তভোগী গ্রাহকরা খবরের কাগজকে বলেন, ‘এ বছরের শুরুতে মনোহরদী পৌর এলাকার হাররদিয়া বুরুজ শেখের বাড়ির দ্বিতীয় তলায় গ্রামীণ ডেভেলপমেন্ট সার্ভিসেসের (জিডিএস) কার্যালয় খোলা হয়। পরে ঋণ দেওয়ার কথা বলে নগদ সঞ্চয় জমাসহ তিন শতাধিক গ্রাহক তৈরি করেন তারা। এর মধ্যে শুকুন্দী, বালিয়াকান্দা, সুতালরী কান্দা, নারান্দী দিঘাকান্দী, হাররদিয়া, কাচিকাটা, বারুদিয়া, সাভারদিয়া, সনমানিয়া খিরাটী গ্রামের পোল্ট্রি খামার, মৎস্য খামার, অটোরিকশার চালক ও বিদেশগামী লোকজন বেশি ছিল।’
তারা আরও বলেন, ‘রবিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) থেকে তাদের অফিসে কোনো কর্মচারী দেখা যাচ্ছিল না। দুইদিন পর মঙ্গলবার সকালে টাকা ফেরত পেতে ওই এনজিওর কার্যালয়ের গিয়ে দেখি তালা ঝোলানো। বুধবারও কেউ আসেননি। ভেতরে আসবাবপত্র পড়ে আছে। এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ করা হয়েছে।’
ভুক্তভোগীরা জানান, জিডিএস এনজিও থেকে এক লাখ টাকা ঋণ নেওয়ার জন্য প্রতি গ্রাহকদের ১০ হাজার টাকা সঞ্চয় জমা দিতে হয়েছে। এভাবে ১০ হাজার থেকে ৪০ হাজার টাকা করে জমা দিয়েছেন গ্রাহকরা। ঋণের আশায় গ্রামের তিন শতাধিক মানুষ এনজিওতে টাকা জমা রাখেন। টাকা নিয়ে উধাও হওয়ায় তারা নিঃস্ব হয়ে গেছেন।
বালিয়াকান্দা গ্রামের গ্রাহক বাছেদ প্রধান বলেন, ‘দুই লাখ টাকা ঋণ দেবে বলে ২০ হাজার টাকা অগ্রিম নেন তারা। না বুঝে টাকাগুলো দেওয়ায় তারা পেটে লাথি দিয়ে পালিয়ে গেল। সবাই মোবাইল ফোন বন্ধ করে রেখেছে। তাদের কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। আমার টাকা ফেরত পেতে প্রশাসনের সহযোগিতা চাই।’
দুই লাখ টাকা ঋণের আশায় ২০ হাজার টাকা করে জমা দিয়েছেন ফাইজ উদ্দিন ও মোস্তফা ফরাজী। এ ছাড়া তিন লাখ টাকা ঋণের আশায় মনি আক্তার ও পারভীন সুলতানা জমা দিয়েছেন ৩০ হাজার টাকা করে।
চর নারান্দী গ্রামের আলমগীর হোসেন বলেন, ‘আমি শ্রমিকের কাজ করি। আমাকে তিন লাখ টাকা ঋণ দেবে বলে রবিবার সকালে ২৫ হাজার টাকা নিয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরের পর শুনতে পাই টাকা নিয়ে প্রতারকরা পালিয়েছে।’
যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে গ্রামীণ ডেভেলপমেন্ট সার্ভিসেসের (জিডিএস) মাঠকর্মী আকলিমাসহ অন্য কর্মকর্তাদের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
মনোহরদী থানার ওসি জানান, গ্রাহকদের দেওয়া অভিযোগের যথাযথ ব্যবস্থা নিতে পুলিশের তদন্ত চলছে।
শাওন/পপি/অমিয়/