ঢাকা ২১ আষাঢ় ১৪৩১, শুক্রবার, ০৫ জুলাই ২০২৪

জিআই পণ্যের তালিকা প্রস্তুত করতে হাইকোর্টের নির্দেশ

প্রকাশ: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৮:৪৭ পিএম
আপডেট: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৮:৪৮ পিএম
জিআই পণ্যের তালিকা প্রস্তুত করতে হাইকোর্টের নির্দেশ
ছবি : খবরের কাগজ

বাংলাদেশের জিওগ্রাফিক্যাল আইডেন্টিফিকেশন (জিআই) বা ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্যের তালিকা করতে সরকারের সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আগামী ১৯ মার্চের মধ্যে সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে এ নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে জিআই পণ্যের তালিকা তৈরি ও রেজিস্ট্রেশনে কর্তৃপক্ষের ব্যর্থতা কেন অবৈধ হবে না, তা জানতে চেয়েছেন আদালত। জবাব দিতে বাণিজ্য সচিব, কৃষি সচিব, সংস্কৃতি সচিবসহ সংশ্লিষ্টদের চার সপ্তাহ সময় দেওয়া হয়েছে।

সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) হাইকোর্টের বিচারপতি খুরশীদ আলম সরকার ও বিচারপতি সরদার রাশেদ জাহাঙ্গীরের বেঞ্চ এ নির্দেশনা দেন।

বাংলাদেশের সব জিআই পণ্যের তালিকা তৈরির নির্দেশনা চেয়ে গত রবিবার জনস্বার্থে রিট করেন টাঙ্গাইলের ব্যারিস্টার সারওয়াত সিরাজ শুক্লা।

সম্প্রতি কয়েক শ বছরের পুরোনো টাঙ্গাইল শাড়িকে নিজেদের দাবি করে জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে ভারত। এরপর গত ৮ ফেব্রুয়ারি টাঙ্গাইল শাড়িকে জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেয় শিল্প মন্ত্রণালয়। টাঙ্গাইল শাড়িকে পশ্চিমবঙ্গের জিআই পণ্য হিসেবে ভারত স্বীকৃতি দিলে বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক ও সমালোচনা শুরু হয়। তখনই দেশি জিআই পণ্যের তালিকা করার বিষয়টি বাংলাদেশের সর্বত্র আলোচনায় আসে।

এমএ/

স্ত্রী-সন্তানসহ মতিউরের সম্পদ ক্রোকের নির্দেশ

প্রকাশ: ০৫ জুলাই ২০২৪, ১২:৩১ পিএম
আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২৪, ১২:৩১ পিএম
স্ত্রী-সন্তানসহ মতিউরের সম্পদ ক্রোকের নির্দেশ
মতিউর রহমান

ছাগলকাণ্ডে দেশজুড়ে আলোচিত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক সদস্য মতিউর রহমান ও তার দুই স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ের নামে ঢাকায় দুটি বহুতল বাড়ি, দুটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাট, নরসিংদীর রায়পুরা ও বরিশালের মুলাদীতে ১০ একর ৩৬ শতাংশ (১০৩৬ শতাংশ বা ৬২৮ কাঠা বা ৩১ বিঘা) জমি ক্রোকের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। গতকাল বৃহস্পতিবার দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন এ ক্রোকের নির্দেশ দেন।  

ক্রোকের আদেশ দেওয়া সম্পদের মধ্যে রয়েছে, মতিউর রহমানের নামে বরিশালের মুলাদীতে কমিশনারের চর মৌজায় ১১৪ শতাংশ বা ৬৯ কাঠা জমি। প্রথম স্ত্রী লায়লা কানিজের নামে ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার ডি ব্লকের ৭/এ রোডে ২ হাজার ৫৪০ স্কয়ার ফুটের বিলাসবহুল ফ্ল্যাট ও নরসিংদীর রায়পুরায় ৫২২ শতাংশ বা ৩১৭ কাঠা জমি। 

প্রথম স্ত্রীর ছেলে তৌফিকুর রহমান অর্ণবের নামে নরসিংদীর রায়পুরায় ২৭৫ শতাংশ বা ১৬৭ কাঠা জমি, মেয়ে ফারজানা রহমান ইপ্সিতার নামে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার ডি ব্লকের ১ নম্বর রোডে ৫ কাঠা জমিতে বহুতল ভবন ও নরসিংসীর রায়পুরায় ১০৬ শতাংশ বা ৬৫ কাঠা জমি এবং দ্বিতীয় স্ত্রী শাম্মী আখতারের নামে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার এন ব্লকে ৫ কাঠা জমিতে একটি বাড়ি ও ধানমন্ডির জিগাতলায় একটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাট রয়েছে।    

দুদকের প্যানেল আইনজীবী মীর আহমেদ আলী সালাম খবরের কাগজকে বলেন, ‘দুদকের অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত ক্রোকের আদেশ দিয়েছেন। আবেদনে বলা হয়েছে, মতিউর রহমান ও তার স্ত্রী-সন্তানদের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থ পাচারের অভিযোগের অনুসন্ধান চলছে। 

বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, তারা এসব সম্পদ বিক্রি বা হস্তান্তরের চেষ্টা করছেন। এটা করা হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ প্রক্রিয়া গ্রহণের উদ্দেশ্য ব্যর্থ হবে। তাই সুষ্ঠু অনুসন্ধান ও ন্যায় বিচারের স্বার্থে স্থাবর সব সম্পদ ক্রোক করা একান্ত প্রয়োজন।’

এদিকে অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে মতিউর ও তার দুই স্ত্রী- লায়লা কানিজ ও শাম্মী আখতার, প্রথম পক্ষের বড় ছেলে তৌফিকুর রহমান অর্ণব ও মেয়ে ফারজানা রহমান ইপ্সিতার সম্পদের হিসাব চেয়ে গত ২ জুলাই নোটিশ দেওয়া হয়েছে। 
নোটিশে সম্পদবিবরণী দাখিলের জন্য তাদের ২১ দিন সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে। এতে তাদের নিজ নিজ ও তাদের ওপর নির্ভরশীল ব্যক্তিদের নামে থাকা যাবতীয় স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ, দায়-দেনা, আয়ের উৎস ও তা অর্জনের বিস্তারিত বিবরণী কমিশনে দাখিল করতে বলা হয়েছে।

মতিউর রহমানের দুর্নীতি ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান করতে গত ৪ জুন সিদ্ধান্ত নেয় দুদক। পরে ২৩ জুন দুদকের উপ-পরিচালক আনোয়ার হোসেনের নেতৃত্ব তিন সদস্যের অনুসন্ধান টিম গঠন করা হয়। মতিউর রহমান ও তার স্ত্রী-সন্তানের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অনুসন্ধান শুরু হলে তাদের নামে থাকা অর্থ-সম্পদের তথ্য চেয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক, বিএফআইইউ, বিএসইসি, দেশের সব সাব-রেজিস্ট্রি অফিস ও ভূমি অফিসে চিঠি পাঠানো হয়েছে। 

দুদকের চিঠি পেয়ে বিএফআইইউ ও বিএসইসি স্বউদ্যোগে মতিউর ও তার স্ত্রী-সন্তানের নামে থাকা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ও বিও অ্যাকাউন্টের লেনদেন বন্ধ রাখার নির্দেশনা দিয়েছে। পাশাপাশি অন্তত ২০টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, ১৬টি বিও অ্যাকাউন্টের তথ্য দুদকে পাঠিয়েছে। এদিকে ঢাকার তেজগাঁও রেজিস্ট্রেশন কমপ্লেক্স, নরসিংদীর রায়পুরা, বরিশালের মুলাদীসহ বিভিন্ন সাব-রেজিস্ট্রি অফিস থেকে অন্তত ৪৫টি দলিলের তথ্য-উপাত্ত দুদকে আসে।

মতিউর রহমানের ছেলে ইফাত মোহাম্মদপুরের সাদিক অ্যাগ্রো থেকে ১৫ লাখ টাকায় একটি ছাগল এবং ঢাকার বিভিন্ন খামার থেকে ৭০ লাখ টাকার গরু কিনেছেন বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়। এরপর থেকে মতিউর রহমানের ছেলের দামি ব্র্যান্ডের ঘড়ি, গাড়ি, আলিশান জীবনযাপন, মতিউর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে রিসোর্ট, শুটিং স্পট, বাংলোবাড়ি, জমিসহ নামে-বেনামে অঢেল সম্পত্তির তথ্য বেরিয়ে এলে বিষয়টি দেশ-বিদেশে ব্যাপক আলোচিত হয়। 

ইতোমধ্যে নিষিদ্ধ গরু আমদানি ও বিক্রির বিষয়ে দুর্নীতির অভিযোগে সাভারে গো-প্রজজনকেন্দ্র এবং সাদিক অ্যাগ্রোতে অভিযান চালিয়েছে দুদকের এনফোর্সমেন্ট টিম। অভিযান শেষে কোটি টাকা মূল্যের অন্তত ৬টি গরু জব্দ করা হয়েছে।  

এনামুলের ৯ তলা বাড়িসহ শতকোটি টাকার সম্পদ ক্রোক

প্রকাশ: ০৫ জুলাই ২০২৪, ১২:২৭ পিএম
আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২৪, ১২:২৭ পিএম
এনামুলের ৯ তলা বাড়িসহ শতকোটি টাকার সম্পদ ক্রোক
মোহাম্মদ এনামুল হক

সিলেটের কাস্টমস কমিশনার হিসেবে কর্মরত মোহাম্মদ এনামুল হকের ঢাকার বসুন্ধরায় দুটি প্লটের ওপর নির্মিত একটি ৯ তলা বাড়ি, রাজধানীর কাকরাইল ও মোহাম্মদপুরে সাতটি বাণিজ্যিক ফ্লোর, কাকরাইল ও বনানীতে চারটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাট, ১০টি কার পার্কিং, খিলক্ষেতে এক বিঘার (৩৩ শতাংশ) একটি প্লট, ঢাকার বাড্ডা ও গাজীপুর সদরে পাঁচ কাঠা করে আরও দুটি প্লট ক্রোকের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। 

একটি মামলার ভিত্তিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগরের বিশেষ জজ মোহাম্মদ আস্সামছ জগলুল হোসেন এ নির্দেশ দেন। দুদকের আইনজীবী মীর আহমেদ আলী সালাম এ তথ্য নিশ্চিত করেন। 

দলিলে এসব সম্পদের মূল্য ৯ কোটি ৯৫ লাখ ৪৪ হাজার ৫০০ টাকা দেখানো হলেও বাস্তবে এ সম্পদের মূল্য শতকোটি টাকার কম নয়। কারণ দলিলে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় তিন কাঠার দুটি প্লট অর্থাৎ ছয় কাঠার মূল্য দেখানো হয়েছে মাত্র ৬১ হাজার টাকা। দুদক কর্মকর্তাদের তদন্তকালে এসব সম্পদের প্রকৃত মূল্য নির্ধারণ করা হবে। সে ক্ষেত্রে এসব সম্পদের মূল্য শতকোটি ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে জানান দুদক কর্মকর্তারা। 

গতকাল এনামুলের ক্রোক করা সম্পদের মধ্যে রয়েছে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার জি-ব্লকের ১৩ নম্বর রোডের ৯৫৪ ও ৯৫৫ নম্বর প্লটের ওপর নির্মিত ৯ তলা ভবন, কাকরাইল মোড়সংলগ্ন আইরিশ নূরজাহান ভবনে ১ হাজার ১৭০ বর্গফুটের বাণিজ্যক ফ্লোর, একটি কার পার্কিংসহ ১ হাজার ৮৩৫ বর্গফুটের ফ্ল্যাট, এর পাশেই বহুতল ভবন ভূঁইয়া ট্রেড সেন্টারে কার পার্কিংসহ ১ হাজার ৯০০ ও ৩ হাজার ৮০০ বর্গফুটের দুটি ফ্ল্যাট, বনানীতে কার পার্কিংসহ ২ হাজার ৪২৮ বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট। 

এ ছাড়া মোহাম্মদপুরে সাড়া সন্ধানী লাইফ টাওয়ারে চারটি কার পার্কিংসহ ১০ হাজার ৯৬৫ বর্গফুটের তিনটি বাণিজ্যিক ফ্লোর, পার্শ্ববর্তী সাড়া আফতাব টাওয়ারে তিনটি কার পার্কিংসহ ১২ হাজার বর্গফুটের তিনটি বাণিজ্যিক ফ্লোর, রাজধানীর খিলক্ষেতে ৩৩ শতাংশ বা এক বিঘার একটি প্লট, বাড্ডায় চার কাঠার একটি ও গাজীপুর সদরে পাঁচ কাঠার আরেকটি প্লট ক্রোকের আদেশ দেওয়া হয়েছে।

দুদক জানিয়েছে, অবৈধ উপায়ে ৯ কোটি ৯৫ লাখ ৪৪ হাজার ৫০০ টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগে কাস্টমস কমিশনার মোহাম্মদ এনামুল হকের বিরুদ্ধে গত বছরের ৩১ জুলাই মামলা করে দুদক। মামলার তদন্ত চলাকালে সম্প্রতি এসব সম্পদ বিক্রি বা হস্তান্তরের চেষ্টা করছেন এনামুল। ফলে এই হস্তান্তর ঠেকাতে ক্রোকের আদেশ চাইল দুদক। শিগগিরই এসব সম্পদ তদারকির জন্য রিসিভার (তত্ত্বাবধায়ক) নিয়োগের আবেদন জানানো হবে বলে দুদক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

আপিল বিভাগের প্রশ্ন আন্দোলনের চাপ দিয়ে কি রায় পরিবর্তন করবেন?

প্রকাশ: ০৫ জুলাই ২০২৪, ১২:২৩ পিএম
আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২৪, ১২:২৫ পিএম
আন্দোলনের চাপ দিয়ে কি রায় পরিবর্তন করবেন?
হাইকোর্ট

সরকারি চাকরির প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় আপাতত বহাল রাখা হয়েছে। একই সঙ্গে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর রাষ্ট্রপক্ষকে লিভ টু আপিল করতে বলেছেন আপিল বিভাগ।

বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের ছয় বিচারপতির বেঞ্চ এ আদেশ দেন। 

শুনানিতে আপিল বিভাগ রাষ্ট্রপক্ষের উদ্দেশে বলেন, ‘আপাতত হাইকোর্টের রায় যেভাবে আছে, সেভাবে থাকুক। রায় প্রকাশ হলে আপনারা নিয়মিত আপিল দায়ের করেন। আমরা শুনব। প্রধান বিচারপতি প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘এত আন্দোলন কিসের, আন্দোলনের চাপ দিয়ে কি হাইকোর্টের রায়, সুপ্রিম কোর্টের রায় পরিবর্তন করবেন?’

আদালতের কার্যতালিকার ক্রমানুসারে বিষয়টি শুনানিতে এলে রিটকারী পক্ষের আইনজীবী (অ্যাডভোকেট অন রেকর্ড) জহিরুল ইসলাম এক দিনের (নট টুডে) সময়ের আবেদন জানান। 

তিনি বলেন, ‘সিনিয়র আইনজীবী মনসুরুল হক দেশের বাইরে আছেন।’ শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিনউদ্দিন বলেন, ‘আগে কোটা ছিল। ২০১৮ সালে কোটাপদ্ধতি সংশোধন করে পরিপত্র জারি করা হয়। এটা বাতিল ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট।’ 

আদালত বলেন, ‘চেম্বার আদালত কি আদেশ দিয়েছিলেন?’ এ সময় অ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির জন্য নির্ধারণ করেছেন।’ 

আদালত বলেন, ‘নট টুডে (আজ নয়)। আপনারা সিপি (লিভ টু আপিল) ফাইল করেন। আমরা এখন ইন্টারফেয়ার (হস্তক্ষেপ) করব না।’ 

অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিনউদ্দিন বলেন, ‘রায়টা (হাইকোর্টের) পাইনি।’ আদালত বলেন, ‘পাবেন।’ 

একপর্যায়ে আদালত বলেন, ‘এত আন্দোলন কিসের, রাস্তায় শুরু হয়েছে? আন্দোলনের চাপ দিয়ে কি হাইকোর্টের রায়, সুপ্রিম কোর্টের রায় পরিবর্তন করবেন?’ এ সময় অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিনউদ্দিন বলেন, ‘নো, নো’।

সরকারি চাকরিতে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে গত ৫ জুন রায় দেন হাইকোর্টের বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি খিজির হায়াতের বেঞ্চ। এ রায় স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। 

৯ জুন এক আদেশে আবেদনটি শুনানির জন্য আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন চেম্বার জজ আদালত। সে অনুযায়ী আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানি শুরু হয়েছে।

কোটা পর্যালোচনা কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে ২০১৮ সালের ৩ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে পরদিন ৪ অক্টোবর কোটা পদ্ধতি তুলে দিয়ে পরিপত্র জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব ফয়েজ আহম্মদ স্বাক্ষরিত পরিপত্রে বলা হয়, ‘সরকার সকল সরকারি দপ্তর, স্বায়ত্তশাসিত/আধা-স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান এবং বিভিন্ন করপোরেশনের চাকরিতে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ১৭/০৩/১৯৯৭ তারিখের সম (বিধি-১)এস-৮/৯৫ (অংশ-২)-৫৬ (৫০০) নং স্মারকে উল্লিখিত কোটা পদ্ধতি নিম্নরূপভাবে সংশোধন করিল: (ক) ৯ম গ্রেড (পূর্বতন ১ম শ্রেণি) এবং ১০ম-১৩তম গ্রেডের (পূর্বতন ২য় শ্রেণি) পদে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ প্রদান করা হইবে; এবং (খ) ৯ম গ্রেড (পূর্বতন ১ম শ্রেণি) এবং ১০ম-১৩তম গ্রেডের (পূর্বতন ২য় শ্রেণি) পদে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি বাতিল করা হইল। এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হইবে।’

পরে এ সিদ্ধান্তের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান।

এমপি আনার হত্যা ৮ আগস্টের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ

প্রকাশ: ০৫ জুলাই ২০২৪, ০১:০৬ এএম
আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২৪, ০১:০৬ এএম
৮ আগস্টের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ
ছবি: সংগৃহীত

ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আনোয়ারুল আজীমকে (আনার) খুনের উদ্দেশ্য অপহরণের অভিযোগে করা মামলার প্রতিবেদন আগামী ৮ আগস্টের মধ্যে দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুবুল হক এ আদেশ দেন। 

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালতে দায়িত্বরত শেরেবাংলা নগর থানার সাধারণ নিবন্ধন শাখার কর্মকর্তা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) জালাল উদ্দিন। তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার এই মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ধার্য ছিল। তবে তদন্ত সংস্থা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) সংস্থা প্রতিবেদন দাখিল করেনি। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নতুন তারিখ ধার্য করেন আদালত। এমপি আনারকে খুন করার উদ্দেশে অপহরণের অভিযোগে গত ২২ মে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা করেন তার মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন। মামলায় কয়েকজন আসামি ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তাদের মধ্যে তিনজন জবানবন্দি প্রত্যাহারের আবেদন করেছেন। 

তারা হলেন, ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক কাজী কামাল আহমেদ বাবু ওরফে গ্যাস বাবু, শিমুল ভুঁইয়া ওরফে শিহাব ওরফে ফজল মোহাম্মদ ভুঁইয়া ওরফে আমানুল্যাহ সাঈদ ও তানভীর ভুঁইয়া।

বৃহস্পতিবার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাহবুবুল হকের আদালতে আসামিদের জবানবন্দি প্রত্যাহারের ওপর শুনানি হয়। আসামি পক্ষে আইনজীবী এহসানুল হক সমাজীসহ কয়েকজন আইনজীবী শুনানি করেন। এ সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। শুনানি শেষে আদালত আবেদনগুলো নথিভুক্ত রাখার নির্দেশ দেন। সেই সঙ্গে আসামিরা রিমান্ডে নির্যাতনের কারণে অসুস্থ জানিয়ে চিকিৎসার আবেদন করেন। আদালত কারাবিধি অনুযায়ী কারা কর্তৃপক্ষকে চিকিৎসার নির্দেশ দেন।

এদিকে আনার হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সর্বশেষ গ্রেপ্তার দুই আসামি ফয়সালকে হৃদরোগের রোগী ও মোস্তাফিজকে কিডনি রোগীর ভুয়া কাগজপত্র, ভুয়া ব্যাংক স্টেটমেন্ট এবং বিভিন্ন ভুয়া কাগজপত্র দেখিয়ে ভারতের ভিসা করা হয় বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। বৃহস্পতিবার তিনি এক ভিডিও বার্তায় বলেন, ‘ভিসা হওয়ার পরে আক্তারুজ্জামান শাহীন ২০ হাজার টাকা দিয়েছিলেন মোস্তাফিজ ও ফয়সালকে রেলযোগে ভারতে চলে যাওয়ার জন্য। ভারতে গিয়ে তারা ১০ এপ্রিল কলকাতার সঞ্জিবা গার্ডেনসে প্রবেশ করেন। ১৩ মে বন্ধু গোপাল বিশ্বাসের বাসা থেকে বেরিয়ে লাল গাড়িতে করে এমপি আনারকে সঞ্জিবা গার্ডেনসে নিয়ে আসেন ফয়সাল। এরপর শাহীনের পিএস পিন্টুর কাছে থেকে অচেতন করার জন্য ক্লোরোফর্ম ও চাপাতি নিয়ে আসার দায়িত্ব পালন করেন মোস্তাফিজ, ফয়সাল ও জিহাদ। এ হত্যাকাণ্ডে এখন পর্যন্ত মোট সাতজন গ্রেপ্তার হয়েছে।’ 

ডিবি প্রধান বলেন, ‘সাতজনের মধ্যে ছয়জনই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এ ছাড়া আরও যাদের নাম এসেছে তাদের গ্রেপ্তারে পুলিশ কাজ করছে। শিগগিরই তাদেরও গ্রেপ্তার করা হবে। আনার হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সর্বশেষ দুর্গম পাহাড়ে অভিযান চালিয়ে মোস্তাফিজ ও ফয়সালকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর আদালত তাদের ছয় দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। সেই রিমান্ডের পরিপ্রেক্ষিতে জিজ্ঞাসাবাদে মোস্তাফিজ ও ফয়সাল জানান, আক্তারুজ্জামান শাহীন তাদেরকে ভারতে যাওয়ার জন্য পাসপোর্টের ব্যবস্থা করে দেন।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘হত্যাকাণ্ড শেষে যখন সবাই চলে যান তখন সর্বশেষ মোস্তাফিজ ও ফয়সাল সঞ্জিবা গার্ডেনসের ওই ফ্ল্যাটে ছিলেন। সেখানেও শাহীনের সঙ্গে কথা হয় তাদের। শাহীন তাদের নির্দেশ দেন, ফ্ল্যাটটিতে যেন কোনো চুল এবং রক্তের দাগ না থাকে, সবকিছু গুছিয়ে ঠিকঠাকভাবে রাখতে বলা হয় তাদের।’ 

মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, ‘আনার হত্যাকাণ্ডের ঘাতক আমানুল্লাহ আমান ওরফে শিমুল ভূঁইয়া যখন ডিবির হাতে গ্রেপ্তার হন তখন শাহীনের দেওয়া ৩০ হাজার টাকা নিয়ে মোস্তাফিজ ও ফয়সাল বিভিন্ন জায়গা আত্মগোপন করেন। এরপর তারা পরিকল্পনা করেন দুর্গম পাহাড়ে কোনো মন্দিরে গিয়ে হিন্দু সেজে সেখানে লুকিয়ে থাকবেন।’

 

সাজার মামলায় ১৪ আগস্ট পর্যন্ত জামিন ড. ইউনূসের

প্রকাশ: ০৫ জুলাই ২০২৪, ১২:২২ এএম
আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২৪, ১২:২২ এএম
সাজার মামলায় ১৪ আগস্ট পর্যন্ত জামিন ড. ইউনূসের
নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: সংগৃহীত

শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় ৬ মাসের সাজাপ্রাপ্ত নোবেলজয়ী ড. ইউনূসসহ চারজনকে আগামী ১৪ আগস্ট পর্যন্ত জামিন দিয়েছেন শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল। তাদের করা আপিলের শুনানিতে বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) হাজির হয়ে তারা স্থায়ী জামিন চান। আদালত শুনানি মুলতুবি করে ১৪ আগস্ট পরবর্তী শুনানি ধার্য করেন এবং ওই সময় পর্যন্ত তাদের জামিন মঞ্জুর করেন শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের বিচারক এম এ আউয়াল। 

এ সময় আদালতে ড. ইউনূসসহ সাজাপ্রাপ্তরা উপস্থিত ছিলেন। শুনানিতে ড. ইউনূসের পক্ষে বক্তব্য উপস্থাপন করেন ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মামুন। কলকারখানা পরিদর্শন অধিদপ্তরের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান।

শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় গত ১ জানুয়ারি এক রায়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ গ্রামীণ টেলিকমের চারজনকে ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন শ্রম আদালত। রায়ের পরই আপিল করার শর্তে তাদেরকে ১ মাসের জামিন দেওয়া হয়। এরপর রায়ের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে গত ২৮ জানুয়ারি ড. ইউনূসসহ চারজন শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালে আপিল করেন। শুনানি নিয়ে নতুন করে জামিন দিয়ে শ্রম আদালতের দেওয়া সাজা স্থগিত করেন ট্রাইব্যুনাল।

সাজা স্থগিতের আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আবেদন করে কল-কারখানা পরিদর্শন অধিদপ্তর। ৫ ফেব্রুয়ারি আবেদনের শুনানি নিয়ে ড. ইউনূসের সাজা স্থগিতের আদেশ স্থগিত করেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি সাজা স্থগিতের আদেশ কেন বাতিল হবে না, মর্মে রুল জারি করেন। পরে রুলের শুনানি শেষে গত ১৮ মার্চ ড. ইউনূসের ৬ মাসের সাজা ও দণ্ড শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালে স্থগিতের আদেশ বাতিল করেন হাইকোর্ট। ফলে ড. ইউনূসের ৬ মাসের সাজা চলমান থাকবে বলে রায়ে বলা হয়। পরে গত বুধবার রায়ের পূর্ণাঙ্গ কপি প্রকাশ করা হয়। রায়ে বলা হয়, সাজা স্থগিতের কোনো বিধান নেই। জামিন দেওয়া হলে সাজা স্থগিতের আলাদা আদেশ দেওয়ার প্রয়োজন নেই। 

এদিকে গত ১৬ এপ্রিল ধার্যদিনে ড. ইউনূসসহ সাজাপ্রাপ্তদের ২৩ মে পর্যন্ত জামিন দেন ট্রাইব্যুনাল। এরপর ২৩ মে ধার্যদিনে ৪ জুলাই পর্যন্ত জামিন দেওয়া হয়।