যখনই কোনো দুর্ঘটনা, দুর্যোগ ও বড় সংকট সৃষ্টি হয়, তখনই দায়িত্বপালনকারী কর্তৃপক্ষ অনিয়ম-দুর্নীতি ও অপরাধী খুঁজতে মাঠে নামে। শুরু হয় বিশেষ অভিযান। এরপর অল্প দিনেই থেমে যায় অভিযান। আবার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় সবকিছু।
২০১০ সালে ঢাকায় অগ্নিঝুঁকি নিয়ে বেশি আলোচনা হয় ঢাকার নিমতলীতে আগুনে ১২৪ জনের মৃত্যুর পর। ওই সময় সরকারি সংস্থাগুলো অভিযান চালায়। কিন্তু সমন্বিত, কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী দীর্ঘমেয়াদি অভিযান চালানো হয়নি।
গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজ ভবনে অগ্নিকাণ্ডে নিহত হন ৪৬ জন। ওই ঘটনার পর নড়েচড়ে বসে ফায়ার সার্ভিস, রাজউক, সিটি করপোরেশন ও পুলিশ। শুরু হয় অগ্নিনিরাপত্তায় বিশেষ অভিযান। এ ধরনের অভিযান আগেও হয়েছে। তবে, ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে বিপুল সংখ্যক হতাহতের পর জোরদার অভিযান শুরু হয়। এবার বিভিন্ন মহল থেকে দাবি উঠেছে, অভিযান চলমান রেখে যেন স্থায়ী সুফল নিশ্চিত করা হয়।
প্রতিবছর রমজান মাসকে ঘিরে বাজারে সব দ্রব্যমূল্য পাল্লা দিয়ে বাড়ে। তখন বিশেষ অভিযানে নামে প্রশাসন। এসব অভিযান কখনোই দ্রব্যের মূল্য কমাতে পারেনি। দোকানমালিকরা কিছুটা ভয়ে থাকলেও ঠিকই বেশি দামে জিনিসপত্র বিক্রি করেছেন। রোজার পরেই অভিযান থেমে যায়। বাজার আরও নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে ওঠে। এবারও শুরু হয়েছে বাজারে বিশেষ অভিযান। অভিযান জোরদার করতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে দেওয়া হয়েছে এক গুচ্ছ নির্দেশনা।
গত জানুয়ারি মাসে গুলশানে ইউনাইটেড হাসপাতালে খতনা করাতে এসে শিশু আয়ানের মৃত্যুর পর অবৈধ হাসপাতাল-ক্লিনিকের বিরুদ্ধে জোরদার অভিযান শুরু হয়। এ রকম প্রতিটি দুর্ঘটনা ও চরম সংকটের পর শুরু হয় দায়িত্বপ্রাপ্তদের লোক দেখানো অভিযানের নামে নানাবিধ তৎপরতা।
ভুক্তভোগীসহ বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এসব অভিযানের স্থায়ী সুফল প্রয়োজন। শুধু মৌসুমভিত্তিক নয়, বিদ্যমান আইনের অধীনে দায়িত্বশীলদের প্রতিনিয়ত জোরদার অভিযান চালাতে হবে। যাতে কোনো দুর্ঘটনার পর প্রশ্ন না ওঠে ভবনটি অবৈধ, দোকানটির লাইসেন্স ছিল না। সব সময় সব ক্ষেত্রে আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া, সুশাসন ও আইনের শাসন পুরোপুরি প্রতিষ্ঠা করতে পারলে দুর্ঘটনা, বড় রকমের দুর্যোগ ও সংকট কমানো সম্ভব বলেও মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
এ ব্যাপারে কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান খবরের কাগজকে বলেন, ‘দুর্ঘটনার পর দায়ী এবং আইন ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতেই হবে। তবে, ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টি শুধু দুর্ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত না করে বরং সব সময় সব ক্ষেত্রে সুশাসন ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। এটা অকেশনাল না হয়ে চলমান প্রক্রিয়া নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি সবাইকে আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীলও হতে হবে। সবাইকে আইন মেনে চলতে হবে।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সহসভাপতি স্থপতি ইকবাল হাবিব খবরের কাগজকে বলেন, ‘আমরা রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে বলেছি একটি প্রটোকল তৈরি করতে। রাজউক কী কী করবে সেটার এক চেকলিস্ট থাকতে হবে। সেই চেকলিস্ট নগর পরিকল্পনাবিদ, স্থপতি ও প্রকৌশলীদের সঙ্গে নিয়ে করতে হবে। অথবা নগর উন্নয়ন কমিটিকে সঙ্গে নিয়ে করতে হবে। তা না হলে আমরা আশঙ্কা করছি যেভাবে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে সেটি শুধু ঘুষবাণিজ্যই বাড়াবে। কাজেই এই দিকটা রাজউককে অবশ্যই খেয়াল করতে হবে। নগরবাসীর জানার অধিকার আছে, তারা যে ভবনটিতে থাকেন বা যে ভবনে খেতে যান বা শপিং করতে যান সেই ভবন ঠিক আছে কি না বা ঝুঁকিপূর্ণ কি না। সেজন্য রাজউক ত্রুটিপূর্ণ নকশায় নির্মিত ভবনে নোটিশ টাঙাতে পারে। সেই নোটিশ যাতে কেউ সরিয়ে না ফেলে সেটিও রাজউককে নিশ্চিত করতে হবে।’
এদিকে রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির নেতারা গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন ‘এখন যে অভিযান চলছে তা লোক দেখানো। যাদের এসব দেখভাল করার দায়িত্ব তাদের ব্যর্থতা ঢাকার জন্যই এখন অভিযান চালানো হচ্ছে। এতদিন তারা কোথায় ছিলেন? বিশ্বের সব দেশে সিলিন্ডার ব্যবহার হয়। তিতাস গ্যাস তো লাইনের অনুমোদন দিচ্ছে না। সিলিন্ডারকে প্রমোট করার জন্য লাইন দিচ্ছে না।কমার্শিয়াল ভবনে রেস্তোরাঁ করা যাবে না, কোথায় লেখা আছে? বেইলি রোডের ঘটনার পরে এই প্রথম শুনলাম। যে বিল্ডিংয়ের মালিক আমাদের ভাড়া দিলেন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি কেন? প্রতিটি রেস্তোরাঁ ট্রেড লাইসেন্স নিয়েছে। তাহলে সিটি করপোরেশন কেন ট্রেড লাইসেন্স দিল? আমাদের কোনো অবৈধ রেস্তোরাঁ নেই। এখন রাজউকের অনুমতি যদি না থাকে তাহলে এত দিন কীভাবে চলল? রাজউকের অনুমতি ছাড়া ওই ভবন মালিক কেন রেস্তোরাঁ করতে দিল?’
চলমান অভিযানে বেশকিছু রেস্তোরাঁ সিলগালা, আইন অমান্যকারীদের গ্রেপ্তার, সাজা এবং জরিমানা করার খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে বেইলি রোডে রাজউকের অভিযানে নবাবী ভোজ ও সুলতানস ডাইন সিলগালা করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে অভিযান শুরু করেন রাজউকের কর্মকর্তারা। অভিযানের খবর পেয়ে নবাবী ভোজের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা রেস্তোরাঁ বন্ধ করে সরে পড়েন। পরে রাজউকের অভিযান পরিচালনাকারী দলের সদস্যরা রেস্তোরাঁটি সিলগালা করে দেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, দুইতলা একটি ভবনের নিচতলায় নবাবী ভোজ রেস্তোরাঁটি অবস্থিত। ভবনটির ওপরের তলায় পোশাকের একটি ব্র্যান্ডের শোরুম আছে। সুলতানস ডাইনের বিষয়ে রাজউকের কর্মকর্তারা জানান, রেস্তোরাঁটির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেননি। তবে তারা দাবি করেছেন সব কাগজপত্র আছে। তাই আপাতত রেস্তোরাঁটি সিলগালা করা হয়েছে। কাগজপত্র দেখাতে পারলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
অভিযানে ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টার নামের একটি ভবনের অগ্নি সুরক্ষার ছাড়পত্র হালনাগাদ না করায় দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টার ভবনটির পরিচালক সারফুদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের সবকিছু ঠিক আছে। শুধু ফায়ারের ছাড়পত্র এখনো পাইনি।’
অভিযান পরিচালনাকারী রাজউকের অঞ্চল-৭-এর পরিচালক মনির হোসেন হাওলাদার বলেন, ‘রাজউক নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছে। শুধু রেস্তোরাঁর বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হচ্ছে না। যেখানেই সমস্যা বা কোনো ব্যত্যয় পাওয়া যাচ্ছে, সেখানেই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’
খিলগাঁওয়ে অভিযানের খবরে রেস্তোরাঁ বন্ধ করে পলায়ন: ভবনে থাকা রেস্তোরাঁয় অগ্নিনিরাপত্তা নিশ্চিতে গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর খিলগাঁও এলাকায় অভিযান চালায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) ও ফায়ার সার্ভিস। দুপুর পৌনে ১২টায় এই অভিযান শুরু হয়।
খিলগাঁও তালতলা এলাকার শহিদ বাকি সড়কের আশপাশে বিভিন্ন ভবনে শতাধিক রেস্তোরাঁ আছে। অভিযানের খবর পেয়ে এসব রেস্তোরাঁর বেশির ভাগ বন্ধ করে রাখা হয়। কর্মকর্তা-কর্মচারীরা পালিয়ে যান।
দুপুর পৌনে ১২টার দিকে এলাকায় যান ডিএসসিসির নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জাহাঙ্গীর আলমসহ ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা। তাদের সঙ্গে আনসার ও পুলিশের সদস্যরা ছিলেন।
অভিযানের শুরুতেই সাততলা নাইটিংগেল স্কাইভিউ টাওয়ারে প্রবেশ করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটসহ অন্যরা। ভবনটির নিচতলায় একটি কাপড়ের শোরুম আছে। ভবনের বেজমেন্ট, ছাদসহ বাকি সব কয়টি তলাতেই রেস্তোরাঁ রয়েছে।
ভবনটিতে শর্মা কিং নামের একটি রেস্তোরাঁ খোলা থাকতে দেখা যায়। বাকি সব কটি রেস্তোরাঁ বন্ধ দেখা যায়। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আসার খবর পেয়ে এই রেস্তোরাঁগুলো বন্ধ করে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীরা পালিয়েছেন বলে জানা যায়।
অভিযান শেষে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ছাদসহ ভবনটির প্রতি ফ্লোর তারা পরিদর্শন করেছেন। ভবনটি অগ্নিনিরাপত্তার ক্ষেত্রে অত্যধিক ঝুঁকিপূর্ণ। তাই তারা ব্যানার টানিয়ে দিয়েছেন। ভবনটি সিলগালা করে দিয়েছেন।
‘সাময়িক বন্ধ’ ব্যানার ঝুলিয়ে চলে যান কাচ্চি ভাই ও সিরাজ চুইগোস্তর মালিকরা: এরপর পাশের একটি বহুতল ভবনে যাওয়ার পর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা দেখতে পান ভবনটির নিচতলায় ‘কাচ্চি ভাই’, ‘সিরাজ চুইগোস্ত’সহ পাঁচটি রেস্তোরাঁ রয়েছে। সেখানে ‘রেস্টুরেন্টের উন্নয়নকাজের জন্য প্রতিষ্ঠান সাময়িক বন্ধ’ এমন একটি ব্যানার ঝুলিয়ে রাখা। ভবনের মূল ফটকে তালা লাগানো থাকায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সেটি আর পরিদর্শন করতে পারেননি।
এ সময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জাহাঙ্গীর আলমের কাছে সাংবাদিকেরা জানান, রাতে এসব রেস্তোরাঁ খোলা রাখা হয়। জবাবে তিনি বলেন, ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করতে হয় দিনের বেলায়। তাদের অফিস সময় সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত। এরপরও অতিগুরুত্বপূর্ণ হলে তারা অভিযান পরিচালনা করেন। যেমন গতকাল ধানমন্ডিতে সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত তারা অভিযান চালিয়েছেন।
এদিকে ওই ভবনের আশপাশের বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল রাত ১০টা পর্যন্ত ভবনের সব রেস্তোরাঁ খোলা ছিল। অভিযানের খবর পেয়ে সকালে প্রতিষ্ঠান সাময়িক বন্ধের ব্যানার টানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অভিযান, পালিয়ে গেল কর্মকর্তারা: গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে অভিযান চালিয়ে বেসরকারি নিউ আল আকসা ডায়াগনস্টিক সেন্টার অ্যান্ড ব্লাড ব্যাংক বন্ধ করে দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
রাজধানীর মুগদা জেনারেল হাসপাতালের সামনে এ ডায়াগনস্টিক সেন্টারে কোনো ধরনের অনুমতি ছাড়াই চালানো হচ্ছিল নানা ধরনের স্বাস্থ্য পরীক্ষা।
অভিযানে হাতেনাতে ধরা পড়ে ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশেই পরীক্ষা-নিরীক্ষার বিষয়, পরীক্ষার জন্য রক্ত নিতে দেখা যায় অদক্ষদের, অনুমোদন ছাড়াই করা হচ্ছিল এক্সরেও। দীর্ঘদিন ধরে কার্যক্রম চালিয়ে আসা এই ডায়াগনস্টিক সেন্টারটি অভিযানের সময় কোনো লাইসেন্স দেখাতে পারেনি।
এদিকে মুগদাতেই জমজম ডায়াগনস্টিক সেন্টারেও অভিযান চালিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। সেখানেও প্রমাণ মিলেছে নানা অসঙ্গতির। তবে সতর্ক করে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
এ সময় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অভিযানের খবর পেয়ে মেডিকাস ডায়াগনস্টিক ও কনসালটেশন সেন্টার বন্ধ করে পালিয়ে যায় এর কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।
কক্সবাজারে অভিযান: ভোক্তা অধিকার আইনে মূল্য তালিকা না থাকায় লং বীচকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। সচেতনতা বৃদ্ধির জন্যই মূলত এই অভিযান বলে জানান অভিযান পরিচালনাকারী নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। তিনি জানান, অগ্নিনির্বাপক ত্রুটির জন্য ফায়ার সার্ভিস ক্যাম্পিং করছে। এ ছাড়া এই অভিযান চলমান থাকবে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইবনে নওশেদ।
কুষ্টিয়ায় বাজারে অভিযান: খেজুর ঘরের দোকানে ওষুধ মজুত, ফ্রিজে কাঁচামরিচ, মেয়াদ উত্তীর্ণ ও বিক্রির অযোগ্য ওষুধ রাখা, নোংরা-আবর্জনাসহ নানান অব্যবস্থাপনার অপরাধে কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে ১১টি প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালায় উপজেলা প্রশাসন। এর মধ্যে ৬ ফার্মেসি মালিককে ৪৮ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সড়কে আদালত পরিচালনা করা হয়। আদালত পরিচালনা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা সহকারী কমিশনার ( ভূমি) মো. আমিরুল আরাফাত।
লক্ষ্মীপুরের মেঘনায় অভিযান: নিষিদ্ধ সময়ে মাছ ধরায় ১০ জেলে, ৪ নৌকা ও আড়াই হাজার মিটার কারেন্ট জাল আটক করেছে জেলা মৎস্য বিভাগ ও মজু চৌধুরীর হাট নৌ-পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার সকালে ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অমিত কুমার বিশ্বাসের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালতে ৬ জনকে পাঁচ হাজার টাকা করে মোট ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। তারা হলেন- হারুনুর রশিদ, মনির হোসেন, মুসলেহ উদ্দিন, হোসেন ও শাহিন। বাকিরা অপ্রাপ্ত বয়সের হওয়ায় আটকের পর মুচলেকার মাধ্যমে ছেড়ে দেওয়া হয়। দুটি নৌকা জব্দ এবং আটক জাল মজু চৌধুরীর হাট এলাকায় প্রকাশ্যে আগুন দিয়ে পুড়ে ফেলা হয়েছে।
আইন ও সালিশ কেন্দ্রের চেয়ারপারসন ও প্রবীণ আইনজীবী জেড আই খান পান্না খবরের কাগজকে বলেন, ‘আমাদের দেশ যতদিন আমলানির্ভর থাকবে তত দিন এ ধরনের সমস্যার স্থায়ী সমাধান করা কঠিন। আমলারা তো কামলা। তারা তো সঠিকভাবে তাদের দায়িত্ব পালন করে না। হোটেল-রেস্তোরাঁ, হাসপাতাল-ক্লিনিক, হাটে-বাজারে অভিযানের ধারাবাহিকতা কখনো দেখা যায়নি। ভবিষ্যতে হবে, এটা ভাবাও মুশকিল। বিস্ময়কর হলো- দুর্ঘটনা ঘটলে যারা দায়িত্বপ্রাপ্ত, তারাই প্রশ্ন তোলেন। বিল্ডিং নির্মাণের অনুমোদন রাজউক দিয়েছে। অথচ, রাজউকই বলছে, নিয়ম মেনে করা হয়নি। এটা কি তারা দুর্ঘটনার পর জানতে পারলেন? ফায়ার সার্ভিস অগ্নিনিরাপত্তার বিষয়ে সতর্ক করে তিনটি নোটিশ দিয়েছে। কিন্তু একটি নোটিশও ভবনটিতে টানানো হয়নি। আমাদের দেশে দুর্নীতির ধারাবাহিকতা আছে, লুটপাটের ধারাবাহিকতা আছে, আইন ভঙ্গের ধারাবাহিকতা আছে এবং অধঃপতনের ধারাবাহিকতা আছে। এই অধঃপতনের ধারাবাহিকতা বন্ধ না হলে কোনো সমাধান আসবে বলে মনে হয় না।’