রিভিউ নেওয়ার জন্য মাঠে অধিনায়ককে মেহেদি হাসান মিরাজের তোড়জোড় স্বভাব নিয়ে হাস্যরস কম হয়নি। মিরাজের আবেদনে আম্পায়ার সাড়া না দিলেও তার অতিবিশ্বাসে নেওয়া বেশির ভাগ রিভিউই গেছে বিফলে। নতুন করে বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম দিনে মিরাজের বন্ধু ও জাতীয় দলের বর্তমান অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর নেওয়া রিভিউ জন্ম দিয়েছে হাস্যরসের।
তাইজুলের বলে উইকেট থেকে বেরিয়ে এসে ডিফেন্স করেন ব্যাটার কুশল মেন্ডিস। ব্যাটের একেবারে মাঝ বরাবর লাগা বল চলে যায় শর্ট কাভারে থাকা ফিল্ডার মুমিনুল হকের কাছে। স্লিপে দাঁড়ানো অধিনায়ক শান্ত বেশ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গেই সরব হয়ে সামনে এগিয়ে এসে চারপাশে কথা বলে বেশ প্রস্তুতি নিয়ে নিলেন রিভিউ নেওয়ার। যদিও বোলার তাইজুলকে দেখা যায়নি রিভিউ নিতে আগ্রহ প্রকাশ করতে। পরের দৃশ্য তো সবারই জানা।
ক্রিকেট দুনিয়ায় হাস্যরসের জন্ম দেওয়া শান্তর সেই রিভিউ নিয়ে মজা করেছে কলকাতা পুলিশও। তাদের ফেসবুক পেজে সেই ছবি দিয়ে ‘লোভনীয় লিঙ্কে ক্লিক করার আগে... পরে’ শিরোনামে মিম শেয়ার করেন তারা।
তবে শান্ত একা নন। এমন হাস্যকর রিভিউ নেওয়ায় তিনি পাশে পাচ্ছেন সিনিয়রদেরও। বাংলাদেশ ক্রিকেটে এমন ঘটনা ঘটেছে অন্তত পাঁচবার। চারবারই আবার বোলার ছিলেন তাইজুল ও তাসকিন। যার শুরুটা হয়েছিল মুশফিকুর রহিমকে দিয়ে। ২০১৭ সালে প্রথমবারের মতো ভারতের মাটিতে টেস্ট খেলতে যায় বাংলাদেশ। প্রথম টেস্টের তৃতীয় সেশনে সেই তাইজুলের বলে ডিফেন্স করেন বিরাট কোহলি। সম্পূর্ণ ব্যাটে লাগা সেই বল মুশফিক রিভিউ নিলে উপহাসের হাসি হাসেন কোহলি। আম্পায়ারের সিদ্ধান্তের পর হেসেছেন তামিম ইকবাল ও মেহেদি হাসান মিরাজও।
২০১৮ সালে নিদাহাস ট্রফির সেই ঐতিহাসিক ম্যাচেও ঘটে এমন ঘটনা। কুশল পেরেরার বিপক্ষে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ এলবিডব্লিউর আবেদন জানালে তাতে আম্পায়ার সাড়া না দেওয়ায় অধিনায়ক সাকিব আল হাসান রিভিউ নেন বোলারের অনুরোধে। সেই বলটিও শুধুমাত্র ব্যাটই স্পর্শ করে। প্যাডের কোনো অংশেই লাগেনি রিয়াদের করা সেই বল।
ঐতিহাসিক ম্যাচগুলোতে যেন ভুল রিভিউ নেওয়া বাংলাদেশের অধিনায়কদের অভ্যাসে পরিণত হয়ে যায়। ২০২২ সালে মাউন্ট মঙ্গানুইতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ঐতিহাসিক জয়ের সেই ম্যাচে কিউইদের দ্বিতীয় ইনিংসে তাসকিন আহমেদের ইয়র্কার বল ঠেকান রস টেইলর। বোলার তাসকিন ও কিপার লিটন দুজনেই আবেদন জানান। তাদের আবেদনের প্রেক্ষিতেই রিভিউ নেন অধিনায়ক মুমিনুল হক। জয়ের কারণে ম্যাচটি ঐতিহাসিক হলেও এমন উদ্ভট রিভিউর কারণে ইউটিউবে ১০টি বাজে রিভিউ নেওয়ার তালিকায় ঢুকে গেছে তাসকিন ও মুমিনুলের রিভিউ নেওয়ার সেই ভিডিওর অংশ বিশেষ।
এর বছরখানেক পর একই বোলারের বলে ভুল করে বসেন সাবেক ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবাল। ঘরের মাঠে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে ইংলিশদের ইনিংসের শেষদিকে তাসকিনের ইয়র্কার সামলে নেন আদিল রশিদ। বোলারের আবেদনের পর রিভিউ নিতে এক মুহূর্তও দেরি করেননি অধিনায়ক। রিপ্লেতে দেখা যায় সেই ইয়র্কার বলটি বেশ শক্তভাবেই ব্যাট দিয়ে ঠেকিয়েছেন আদিল রশিদ।
যদিও, ২০২৩ ভারত বিশ্বকাপে সবমিলিয়ে ১১টি রিভিউ নিয়ে ৪টিতে সফল ও ২টি আম্পায়ার্স কলে তালিকায় তিনে ছিল বাংলাদেশ ৩৬.৩৬ শতাংশ সফলতার হার নিয়ে। ১১টির মধ্যে ব্যাটিংয়ের সময় ৫টি রিভিউ নিয়ে ৩টি সফল ও ১টি আম্পায়ার্স কল ছিল। অন্যদিকে, বোলিংয়ের সময় নেওয়া ৬টি রিভিউর মধ্যে ১টি সফল ও ১টি ছিল আম্পায়ার্স কল।