নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে ডাকাতির প্রস্তুতির সময় আট যুবকসহ ৯ জনকে আটক করেছে পুলিশ ও গ্রামবাসী। এসময় তাদের কাছ থেকে আগ্নেয়াস্ত্র ও লুন্ঠিত স্বর্ণসহ ডাকাতির সরঞ্জামাদি জব্দ করা হয়েছে। পুলিশের দাবি, চক্রটি দিনে রিকশা চালিয়ে তথ্য সংগ্রহ করে রাতে ডাকাতিতে লিপ্ত হয়।
শুক্রবার (৫ জুলাই) দুপুরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বেগমগঞ্জ সার্কেল) নাজমুল হাসান রাজিব সংবাদ সম্মেলনে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এরআগে বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) রাতে মিরওয়ারিশপুর ইউনিয়নের লালপুর গ্রাম ও লক্ষ্মীপুরের কমলনগর থেকে তাদের আটক করা হয়।
আটকরা হলেন, নোয়াখালীর সদর উপজেলার পশ্চিম মাইজচরা গ্রামের কামাল উদ্দিন (৪৩), তার সহযোগী শামীম, রায়হান, মিরাজ, শরীফ, হেলাল উদ্দিন, সালাউদ্দিন, হাসান ও স্বর্ণকার রিপন। তাদের কাছ থেকে একটি এলজি, একটি পাইপগান, দুটি কিরিচ, তিনটি ছোরা, গ্রীল কাটার, শাবল এবং আগের ডাকাতি করা পৌনে ৫ ভরি স্বর্ণালংকার উদ্ধার করা হয়েছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বেগমগঞ্জ সার্কেল) নাজমুল হাসান রাজিব বলেন, গত কিছুদিন থেকে বেগমগঞ্জ ও আশপাশের এলাকায় বেশ কয়েকটি ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনার পর পুলিশি তৎপরতা বাড়ানো হয়। বৃহস্পতিবার রাতে খবর আসে মীরওয়ারিশপুরে ডাকাতি করতে চট্টগ্রাম থেকে কামালের নেতৃত্বে একদল যুবক আসছে। সঙ্গে সঙ্গে এলাকাবাসীকে সজাগ করে পাহারা বসানো হয়। রাত দেড়টার দিকে অপরিচিত ব্যক্তিদের চ্যালেঞ্জ করলে তারা অসংলগ্ন কথা বলে। পরে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদে তারা ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলেছে স্বীকার করেন।
নাজমুল হাসান রাজিব আরও বলেন, আটক রায়হানসহ কয়েকজন বেগমগঞ্জ এলাকায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালায়। মূলত তারা বিভিন্ন বাসাবাড়িতে ডাকাতির অবস্থান দেখে খবর দিলে চট্টগ্রাম থেকে কামালের নেতৃত্বে এসে মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। জিজ্ঞাসাবাদে তারা নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুর এলাকায় বিভিন্নস্থানে বেশকিছু ডাকাতি সংঘটিত করার তথ্য দিয়েছে।
এদিকে ডাকাতির কিছু স্বর্ণ তারা লক্ষ্মীপুর জেলার কমলনগর থানার জনৈক রিপন স্বর্ণকারের নিকট বিক্রির কথা জানায়। পরে রাতে ডাকাত কামালের দেখানো ও সনাক্ত মতে ডাকাতির মালামাল ক্রেতা কমলনগরের রিপন স্বর্ণকারকে আটক করা হয়। পরে তার কাছ থেকে লুন্ঠিত ৪ ভরি ১১ আনা স্বর্ণ উদ্ধার করা হয়েছে।
বেগমগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনোয়ারুল ইসলাম খবরের কাগজকে বলেন, আটক দলনেতা কামালের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ১৬টি ডাকাতির মামলাসহ অন্যদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। আটকের ঘটনায় নতুন করে ডাকাতির প্রস্তুতি ও অস্ত্র আইনে দুটি মামলা রুজু করা হয়েছে। শুক্রবার বিকেলে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাদের আদালতে পাঠানো হয়। বিচারক তাদেরকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
সংবাদ সম্মেলনে বেগমগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাজমুল হাসান রাজিব, ওসি মো. আনোয়ারুল ইসলাম ছাড়াও অভিযানে অংশ নেওয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ফরিদুল আলম, দ্বিতীয় কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) কৃষ্ণ কুমার দাস, স্পেসল্যাব চৌধুরী প্রমোজ, ফিরোজ আহাম্মদ উপস্থিত ছিলেন।
ইকবাল হোসেন মজনু/এমএ/