ঢাকা ২২ আষাঢ় ১৪৩১, শনিবার, ০৬ জুলাই ২০২৪

১৫ গ্রামের লাখো মানুষের ভরসা সেতু

প্রকাশ: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১০:৫২ এএম
আপডেট: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১০:৫৩ এএম
১৫ গ্রামের লাখো মানুষের ভরসা সেতু
রায়পুরা উপজেলায় আদিবাদ ইউনিয়নে রাধাগঞ্জ বাজার সংলগ্ন বাঁশের সেতু দিয়ে পারাপার হচ্ছে মানুষ। খবরের কাগজ

এক সময়ের খরস্রোতে আড়িয়ালা খাঁ নদীর সৌন্দর্য দেখতে নরসিংদীর রায়পুরার রাধাগঞ্জ এসে সময় পার করতেন গ্রামগঞ্জের মানুষ। স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে এই নদী পারাপারে একমাত্র ভরসা ছিল নৌকা। দিন দিনে এর নাব্য হারিয়ে যাওয়ায়, নদী পারাপারে খরা মৌসুমে নির্মিত হয় বাঁশের সেতু। প্রায় ৪০ বছর আগে নির্মিত বাঁশের সেতুতে টোল দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছে ১৫ গ্রামের লাখো মানুষ। আড়িয়াল খাঁর বুকে স্বপ্নের সেতু মিলবে কবে, জানে না কেউ।

সরেজমিন দেখা যায়, রায়পুরা উপজেলার আদিয়াবাদ ইউনিয়নের রাধাগঞ্জ বাজারের উত্তর পাশে প্রায় ৩০০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৫ ফুট প্রস্থ শত শত বাঁশের খুঁটি দিয়ে তৈরি সেতুটি দাঁড়িয়ে আছে আড়িয়াল খাঁর বুকে। মাঝে রয়েছে বাঁশের নিচে ভাসমান অবস্থায় খালি ড্রাম। পারাপারের সময় ড্রামগুলো পানিতে ঢেউ তোলে। এতে ঝুঁকি আরও বেড়ে যায়। এ ছাড়া বাঁশ দিয়ে তৈরি সেতুটি পারাপারের সময় পাঁচ টাকা বাধ্যতামূলক টোল গুনতে হয় সবাইকে। 

এদিকে পাকা সেতু হবে, নির্বাচনের আগে এমন প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোট সংগ্রহ করেন জনপ্রতিনিধিরা। অন্যদিকে এই বাঁশের সেতু নিয়ে গণমাধ্যমে বক্তব্য দিতে দিতে ক্লান্ত বলেও মন্তব্য করেন স্থানীয়রা। একই সঙ্গে জনপ্রতিনিধিদের প্রতি ক্ষোভও প্রকাশ করেন তারা। 

নদী পারাপারের সময় স্থানীয়রা জানান, এই নদীর ওপর সেতু নির্মাণের দাবি দীর্ঘদিনের। জনপ্রতিনিধিরা বারবার আশ্বাস দিলেও হয়নি পাকা সেতু। তাই নদী পারাপারে বর্ষায় নৌকা আর খড়া মৌসুমে বাঁশের সেতুই ভরসা করতে হয় তাদের। এ ছাড়া সেতুর পাশেই রয়েছে নয়াচর উম্মুল কুরা ফাজিল ডিগ্রি মাদ্রাসা, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কিন্ডারগার্টেনসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এই সেতু দিয়ে শিক্ষার্থীরা নদী পার হচ্ছেন ঝুঁকি নিয়ে। বিশেষ করে, সেতুতে যান চলাচলের ব্যবস্থা না থাকায় অসুস্থ শিশু, নারী ও বৃদ্ধদের পার হতে দুর্ভোগ পোহাতে হয়।

সেতুর উত্তর পাশে নয়াচর গ্রামের বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রাধাগঞ্জ বাজারে প্রতিদিনই থাকে জমজমাট। এর মধ্যে সপ্তাহে মঙ্গলবার বসে সবচেয়ে বড় হাট। ওই দিনে দূর-দূরান্ত থেকে আসা পণ্যবাহী গাড়ি নয়াচর ঘাটে রেখে যায়। এতে রাধাগঞ্জ বাজারে মালামাল নিয়ে বাঁশের সেতু পার হতে নানা ভোগান্তির শিকার হতে হয়। 

জানা গেছে, রাধাগঞ্জে প্রতি বছর ইজারাদার নিজ উদ্যোগে বাঁশের সাঁকো তৈরি করেন। তাই প্রতিবার সাঁকোটি পারাপারের সময় জনপ্রতি পাঁচ টাকা ভাড়া দিতে হয়। বর্ষায় নৌকায় এবং শুকনো মৌসুমে সেই সাঁকো দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে টোল দিয়ে পারাপার হতে হয় সবাইকে। তাই বর্ষাকালে নৌকাডুবি, শুকনো মৌসুমে বাঁশের সাঁকো থেকে পড়ে গিয়ে প্রায়ই ছোট-বড় দুর্ঘটনাও ঘটছে।

স্থানীয় বাসিন্দা নাহিম খন্দকার খবরের কাগজকে বলেন, শিবপুরের যোশর ও বাঘাব ইউনিয়নের নয়াচর, সৈকারচর, যোশর, মাখাল্লা, কামালপুর, জানখারটেক, লেটাব, দক্ষিণ কামালপুর, কাজিয়ারা এলাকার অনেক কৃষক রাধাগঞ্জ বাজারে সবজি বিক্রি করতে আসেন। সবাই প্রতি মঙ্গলবার পারাপারে ভোগান্তিতে পড়েন। এ ছাড়া আমাদের স্বপ্নের সেতু কবে হবে, সেটা জানি না। তবে শুনেছি এমপি (রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু, নরসিংদী-৫) নাকি প্রকৌশলীকে সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা করতে ডেকেছেন। 

এ বিষয়ে খবরের কাগজের সঙ্গে কথা হলে স্থানীয় সরকার প্রকৌশলের (এলজিইডি) রায়পুরা উপজেলা প্রকৌশলী মো. শামীম ইকবাল মুন্না বলেন, ‘রাধাগঞ্জ ও নয়াচর এলাকায় আড়িয়াল খাঁ নদীতে সেতু নির্মাণের প্রস্তাবনা প্রক্রিয়াধীন আছে। সেখানে সেতুর সীমানা রয়েছে প্রায় ৭০০ ফুট। নদীর নাব্যসংকটের ফলে সেতুটি ‘খ’ শাখায় নির্মাণ করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘এমপি রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু বলেছেন, সংসদ অধিবেশন সেতু নির্মাণের জন্য প্রস্তাব দেবেন। এ ছাড়া এমপি আশ্বাস দিয়েছেন, এবার উন্নয়ন প্রকল্পের প্রথম কাজ হবে রাধাগঞ্জ সেতু নির্মাণ করে এলাকাবাসীর দুর্ভোগ দূর করা।’

সাভারে কলেজ কক্ষ থেকে অধ্যক্ষের লাশ উদ্ধার

প্রকাশ: ০৬ জুলাই ২০২৪, ১২:২০ এএম
আপডেট: ০৬ জুলাই ২০২৪, ১২:৫১ এএম
সাভারে কলেজ কক্ষ থেকে অধ্যক্ষের লাশ উদ্ধার
অধ্যক্ষ শফিকুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত

সাভারে একটি বেসরকারি কলেজের অফিস কক্ষ থেকে শফিকুর রহমান নামে এক অধ্যক্ষের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।

শুক্রবার (৫ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে সাভারে উত্তর রাজাশনের নিজ প্রতিষ্ঠান আলহেরা স্কুল অ্যান্ড কলেজের কলেজ ভবনের অফিস কক্ষ থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। 

মৃত শফিকুর রহমান (৫২) সাভারের উত্তর রাজাশনের শামসুদ্দিনের ছেলে। তিনি আলহেরা স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ও অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জুমার নামাজ শেষে তিনি কলেজ ভবনের অফিস কক্ষে যান। এরপর আর বের হননি। পরে তার খোঁজে অফিস কক্ষে গেলে নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। এ সময় তাকে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে।

সাভার মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুর রাশিদ বলেন, ‘লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকার শহিদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ওই কলেজ অধ্যক্ষ ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। 

নোয়াখালীতে অস্ত্রসহ ৯ ডাকাত আটক

প্রকাশ: ০৫ জুলাই ২০২৪, ১০:১৯ পিএম
আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২৪, ১০:১৯ পিএম
নোয়াখালীতে অস্ত্রসহ ৯ ডাকাত আটক
ছবি: খবরের কাগজ

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে ডাকাতির প্রস্তুতির সময় আট যুবকসহ ৯ জনকে আটক করেছে পুলিশ ও গ্রামবাসী। এসময় তাদের কাছ থেকে আগ্নেয়াস্ত্র ও লুন্ঠিত স্বর্ণসহ ডাকাতির সরঞ্জামাদি জব্দ করা হয়েছে। পুলিশের দাবি, চক্রটি দিনে রিকশা চালিয়ে তথ্য সংগ্রহ করে রাতে ডাকাতিতে লিপ্ত হয়।

শুক্রবার (৫ জুলাই) দুপুরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বেগমগঞ্জ সার্কেল) নাজমুল হাসান রাজিব সংবাদ সম্মেলনে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এরআগে বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) রাতে মিরওয়ারিশপুর ইউনিয়নের লালপুর গ্রাম ও লক্ষ্মীপুরের কমলনগর থেকে তাদের আটক করা হয়।

আটকরা হলেন, নোয়াখালীর সদর উপজেলার পশ্চিম মাইজচরা গ্রামের কামাল উদ্দিন (৪৩), তার সহযোগী শামীম, রায়হান, মিরাজ, শরীফ, হেলাল উদ্দিন, সালাউদ্দিন, হাসান ও স্বর্ণকার রিপন। তাদের কাছ থেকে একটি এলজি, একটি পাইপগান, দুটি কিরিচ, তিনটি ছোরা, গ্রীল কাটার, শাবল এবং আগের ডাকাতি করা পৌনে ৫ ভরি স্বর্ণালংকার উদ্ধার করা হয়েছে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বেগমগঞ্জ সার্কেল) নাজমুল হাসান রাজিব বলেন, গত কিছুদিন থেকে বেগমগঞ্জ ও আশপাশের এলাকায় বেশ কয়েকটি ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনার পর পুলিশি তৎপরতা বাড়ানো হয়। বৃহস্পতিবার রাতে খবর আসে মীরওয়ারিশপুরে ডাকাতি করতে চট্টগ্রাম থেকে কামালের নেতৃত্বে একদল যুবক আসছে। সঙ্গে সঙ্গে এলাকাবাসীকে সজাগ করে পাহারা বসানো হয়। রাত দেড়টার দিকে অপরিচিত ব্যক্তিদের চ্যালেঞ্জ করলে তারা অসংলগ্ন কথা বলে। পরে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদে তারা ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলেছে স্বীকার করেন।

নাজমুল হাসান রাজিব আরও বলেন, আটক রায়হানসহ কয়েকজন বেগমগঞ্জ এলাকায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালায়। মূলত তারা বিভিন্ন বাসাবাড়িতে ডাকাতির অবস্থান দেখে খবর দিলে চট্টগ্রাম থেকে কামালের নেতৃত্বে এসে মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। জিজ্ঞাসাবাদে তারা নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুর এলাকায় বিভিন্নস্থানে বেশকিছু ডাকাতি সংঘটিত করার তথ্য দিয়েছে।

এদিকে ডাকাতির কিছু স্বর্ণ তারা লক্ষ্মীপুর জেলার কমলনগর থানার জনৈক রিপন স্বর্ণকারের নিকট বিক্রির কথা জানায়। পরে রাতে ডাকাত কামালের দেখানো ও সনাক্ত মতে ডাকাতির মালামাল ক্রেতা কমলনগরের রিপন স্বর্ণকারকে আটক করা হয়। পরে তার কাছ থেকে লুন্ঠিত ৪ ভরি ১১ আনা স্বর্ণ উদ্ধার করা হয়েছে।

বেগমগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনোয়ারুল ইসলাম খবরের কাগজকে বলেন, আটক দলনেতা কামালের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ১৬টি ডাকাতির মামলাসহ অন্যদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। আটকের ঘটনায় নতুন করে ডাকাতির প্রস্তুতি ও অস্ত্র আইনে দুটি মামলা রুজু করা হয়েছে। শুক্রবার বিকেলে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাদের আদালতে পাঠানো হয়। বিচারক তাদেরকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। 

সংবাদ সম্মেলনে বেগমগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাজমুল হাসান রাজিব, ওসি মো. আনোয়ারুল ইসলাম ছাড়াও অভিযানে অংশ নেওয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ফরিদুল আলম, দ্বিতীয় কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) কৃষ্ণ কুমার দাস, স্পেসল্যাব চৌধুরী প্রমোজ, ফিরোজ আহাম্মদ উপস্থিত ছিলেন।

ইকবাল হোসেন মজনু/এমএ/

১৪ ট্রাক চিনির নিলাম বেশি দরদাতা গিয়াসের ‘জোশের ঠেলার’ কী কারণ?

প্রকাশ: ০৫ জুলাই ২০২৪, ১০:০২ পিএম
আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২৪, ১০:০৬ পিএম
বেশি দরদাতা গিয়াসের ‘জোশের ঠেলার’ কী কারণ?
ব্যবসায়ী গিয়াস মিয়া। ছবি: সংগৃহীত

বাজারে প্রতি কেজি চিনির খুচরা দর ১১৫ থেকে ১২০ টাকা। পাইকারি দর ১০৪ টাকা। সিলেটে আলোচিত ১৪ ট্রাক চোরাই চিনি সরকারি নিলাম ডাকে বাজার দরের চেয়ে বেশি দামে কিনেছেন নিলাম ডাকে অংশ নেওয়া ব্যবসায়ী গিয়াস মিয়া। প্রতি কেজি ১২৫ টাকা দর হাঁকিয়ে সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে চিনি কিনেছেন তিনি। এই দরের সঙ্গে ভ্যাট ও ট্যাক্স যুক্ত হয়ে প্রতি কেজির দাম পড়ছে ১৪২ টাকা। বাজার দরের চেয়ে প্রতি কেজিতে ২২ থেকে ২৭ টাকা বেশি। এত দাম দিয়ে চিনি কেনার পেছনে কী কারণ? 

এমন প্রশ্ন নিলাম ডাকে অংশ নেওয়া ব্যবসায়ীসহ নিলাম প্রত্যক্ষ করা ব্যবসায়ীদের। এ ব্যাপারে গিয়াস অবশ্য বলছেন, নিলামে অংশ নিয়ে তিনি ‘জোশের ঠেলায়’ বেশি দাম বলে ফেলেছেন। গিয়াস ‘জোশের ঠেলায়’ বললেও নেপথ্যে রয়েছে আরেক ধান্দা। চিনি ব্যবসায়ীরা বলছেন, নিলামে কেনা চিনির কাগজপত্র দেখিয়ে চোরাচালানের আরও চিনি বৈধ করতেই অধিক দাম দিয়ে চিনি কিনেছেন তিনি।   

সর্বোচ্চ দরদাতা গিয়াস মিয়া সিলেটের দক্ষিণ সুরমা থানার লতিফপুরের বাসিন্দা। সিলেট মহানগরীর কালীঘাট বাণিজ্যিক এলাকায় তার ‘রুহেল ট্রেডার্স’ নামে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। বাজার দরের চেয়ে বেশি দাম দিয়ে চিনি কেন কিনলেন? এমন প্রশ্নে নিলামের দিন তিনি খবরের কাগজকে বলেছিলেন, ‘জোশের ঠেলায় বেশি দাম হেঁকে ফেলেছি!’ গিয়াসের ‘জোশের ঠেলার’ পেছনে কারণ ‘চোরাই পথে চিনি চোরাচালানির পন্থা’ হিসেবে বিভিন্ন মাধ্যম থেকে অবহিত হয়ে গতকাল শুক্রবার সকালে ও বিকেলে কয়েকদফা ফোনে যোগাযোগ করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। কালীঘাটে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ পাওয়া গেছে।  

সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের (এসএমপি) জালালাবাদ থানার উমাইরগাঁওয়ে গত ৬ জুন ১৪ ট্রাক চোরাই চিনি ধরা পড়ে। এ ঘটনায় পরদিন পুলিশের এসআই মো. সালাহউদ্দিন বাদী হয়ে জালালাবাদ থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করেন। সিলেটে সাম্প্রতিক সময়ে ভারত থেকে সীমান্ত পথে অবৈধভাবে আনা চিনি চোরাচালানের মধ্যে এটি ছিল সবচেয়ে বড় চালান। পুলিশ হেফাজতে থাকা ১৪ ট্রাক চিনি ১ কোটি ৪২ লাখ টাকায় বিক্রির সরকারি নিলাম ডাক সম্পন্ন হয় গত বুধবার (৩ জুলাই) বিকেলে। সিলেটের অতিরিক্ত মহানগর হাকিম (তৃতীয় আদালত) উম্মে হাবিবার আদালতে প্রকাশ্য নিলামে চিনি বিক্রি করা হয়।

সরকারি নিলাম কমিটির সভাপতি ও সিলেটের অতিরিক্ত মহানগর হাকিম আব্দুল মুমিনসহ কমিটির অন্যান্য সদস্যের উপস্থিতিতে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবনের অষ্টম তলায় প্রকাশ্যে নিলাম অনুষ্ঠিত হয়। জব্দকৃত ১ লাখ ৫ হাজার ৭০০ কেজি চিনির মধ্যে মামলার আলামত হিসেবে ৫ কেজি চিনি আদালতে সংরক্ষণ করে বাকি ১ লাখ ৫ হাজার ৬৯৫ কেজি চিনি নিলামে দেওয়া হয়। নিলামের বিট লিস্টে সর্বমোট ৭০ জন নাম তালিকাভুক্ত করেন। 

সকলের উপস্থিতিতে প্রকাশ্য ওই নিলামে ব্যবসায়ী মো. গিয়াস মিয়া প্রতি কেজি চিনির দাম ১২৫ টাকা ডাক দেন। এই ডাক সর্বোচ্চ হওয়ায় গিয়াসই ক্রেতা মনোনীত হন। মোট টাকার সাড়ে সাত পার্সেন্ট ভ্যাটও দিতে হবে তাকে। চিনির মোট দাম ১ কোটি ৩২ লাখ ১১ হাজার ৮৭৫ টাকা। ভ্যাটসহ দাম পড়েছে ১ কোটি ৪২ লাখ ২ হাজার ৭৬৬ টাকা।

জালালাবাদ থানার ওসি মোহাম্মদ মিজানুর রহমান খবরের কাগজকে বলেন, ‘নিলামের ক্রেতা চিনির মূল ব্যাংকে জমা দিয়ে কাগজপত্র নিয়ে এলে তার কাছে চিনি হস্তান্তর করা হবে। নিলাম ডাকের তিন কার্য দিবসের মধ্যে মালামাল হস্তান্তর করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।’   

এদিকে প্রায় ১৮ থেকে ২০ লাখ টাকা লোকসান দিয়ে ব্যবসায়ী গিয়াস মিয়া চিনি কেনায় বিরূপ মন্তব্য করছেন অন্যান্য ব্যবসায়ী। তারা বলছেন, লোকসান দিয়ে তিনি শুধু চিনিই কেনেননি। তিনি চিনির সঙ্গে কিনেছেন নিলামের বৈধ কাগজ। এই বৈধ কাগজ দিয়ে তিনি এখন অবৈধ আরও চিনি বাজারজাত করবেন। তাই তিনি এখানে লোকসান দেখালেও তার লাভের খাতা ঠিকই পূর্ণ থাকবে। 

এ ব্যাপারে সিলেট মহানগর পুলিশের (এসএমপি) এডিসি মিডিয়া মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম খবরের কাগজকে বলেন, ‘চিনিগুলো নিলাম হয়েছে, এখনো হস্তান্তর হয়নি। চিনিগুলো বাজারমূল্যের চেয়ে বেশি মূল্যে এক ব্যবসায়ী কিনেছেন। এটা নিয়েও দুই ধরনের আলোচনা করছে দুটি পক্ষ। একপক্ষ বলছে, এই নিলামের কাগজ নিয়ে ব্যবসায়ী আরও অবৈধ চিনি আনবেন। আবার যারা চিনি অধিক মূল্যে কিনেছেন, তারা বলছেন বাজারে চিনির একটি সিন্ডিকেট সৃষ্টি হয়েছে। ওই সিন্ডিকেট ভাঙতে বেশি দামে চিনি কেনা হয়েছে। তবে যে যাই বলুক, এই নিলামের চিনি ব্যবসায়ী সরাসরি তার গোডাউনে নিয়ে যাবেন। এই নিলামের কাগজ তিনি সড়কে ব্যবহার করতে পারবেন না। তবে যেহেতু এই বিষয় নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে, তাই আমাদের নজরদারি এখন আরও বাড়বে। আমরা আমাদের ফোর্সকে বলে দেব এ ধরনের কোনো কাগজ কেউ প্রদর্শন করলে যেন তারা ভালোভাবে যাচাই করেন।’

সিট বাণিজ্য, শিক্ষার্থীকে মারধর আইএইচটি ছাত্রলীগ সভাপতিসহ বহিষ্কার ৬

প্রকাশ: ০৫ জুলাই ২০২৪, ০৭:৩০ পিএম
আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২৪, ০৭:৩০ পিএম
আইএইচটি ছাত্রলীগ সভাপতিসহ বহিষ্কার ৬
ছবি: খবরের কাগজ

রাজশাহী ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি (আইএইচটি) শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি মো. আল আমিন হোসেনকে এক বছরের জন্য একাডেমিক কার্যক্রম থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। সিট-বাণিজ্য ও এক ছাত্রকে মারধরের অভিযোগে তাকে বহিষ্কার করা হয়। ফলে এ সময়ে তিনি ক্যাম্পাসে প্রবেশ ও ছাত্রাবাসে অবস্থান করতে পারবেন না। একই অভিযোগে আরও পাঁচ ছাত্রলীগ কর্মীকে ছয় মাসের শাস্তি দেওয়া হয়েছে। এছাড়া দুজনকে তিরস্কার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে এই শাস্তি ১ জুলাই থেকে কার্যকর হয়েছে। যদিও আইএইচটি কর্তৃপক্ষ গত বৃহস্পতিবার বিকেলে নোটিশ আকারে বিষয়টি প্রকাশ করেছেন।

বহিষ্কৃতরা হলেন- আইএইচটি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ডেন্টাল অনুষদের আল আমিন হোসেন, ছাত্রলীগ কর্মী ডেন্টাল বি গ্যালারির মাসুদ পারভেজ, ফারহান হোসেন, ল্যাব-এ গ্যালারির শাহরিয়ার নাফিজ ও পারভেজ মোশাররফ এবং রেডিওলোজি-এ গ্যালারির নিলয় কুমার। তাদের মধ্যে আল আমিন হোসেনকে এক বছরের জন্য ও বাকিদের ৬ মাসের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।

এছাড়া ফার্মেসি বিভাগের সিফাতকে তিরস্কার করে ভবিষ্যতে এমন কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার জন্য সর্বোচ্চ সতর্ক করা হয়েছে। প্রশাসনকে না জানিয়ে অন্য (ছাত্রলীগ সভাপতি) ব্যক্তির সঙ্গে টাকা লেনদেনের জন্য ফার্মেসি বিভাগের মো. হাসানকে তিরস্কারের পাশাপাশি সর্বোচ্চ সতর্ক করা হয়েছে।

শাস্তির নোটিশে জানানো হয়, শাস্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছাত্রলীগের সভাপতি আল আমিন হোসেন প্রথম বর্ষের ছাত্র হাসানের কাছ থেকে হোস্টেলে সিট দেওয়ার নামে টাকা নেন। ২৯ এপ্রিল শাস্তিপ্রাপ্ত অপর পাঁচ শিক্ষার্থী (ছাত্রলীগ কর্মী) হাসানকে মারধর করেন। আহত অবস্থায় তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় ১ মে থেকে আইএইচটি ক্যাম্পাস বন্ধ ঘোষণা করা হয়। ঘটনা তদন্তে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি করা হয়। তদন্ত প্রতিবেদনের আলোকে গত ৬ জুন একাডেমিক সভায় শাস্তির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। শাস্তি প্রদানের নোটিশটি গত ১২ জুন স্বাক্ষর করেছেন অধ্যক্ষ।

শাস্তিপ্রাপ্ত ছাত্রলীগ সভাপতি আল আমিন হোসেন বলেন, ‘নোটিশটি ক্যাম্পাস ছুটির কিছুক্ষণ আগে প্রকাশ করা হয় বলে জানতে পেরেছি। তবে ব্যক্তিগতভাবে শাস্তির কোনো চিঠি আমি পাইনি। যদিও ওই বিষয়টি (সিট বাণিজ্য ও শিক্ষার্থীকে মারধর) তখনই মিটমাট হয়েছে। কিন্তু বিভিন্ন সময়ে কলেজ প্রশাসনের বিরুদ্ধে নানা দাবি-দাওয়া নিয়ে আন্দোলন করায় আমাদের শাস্তির আওতায় আনা হয়েছে।’ এ বিষয়ে আগামী রোববার অধ্যক্ষের সঙ্গে দেখা করে কথা বলবেন বলেও জানান তিনি।

আইএইচটি অধ্যক্ষ ডা. ফারহানা হক জানিয়েছেন, শিক্ষার্থীকে মারধরের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। ওই কমিটির তদন্ত প্রতিবেদন জমার পর একাডেমিক কাউন্সিল সভা হয়। সভায় জড়িতদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার এই সিদ্ধান্ত হয়। গেল কয়েকদিন প্রশাসনিক কাজের চাপ থাকায় এই সংক্রান্ত আদেশের নোটিশটি প্রকাশে দেরি হয় বলে জানান তিনি।

 

ফরিদপুরে বাস-পিকআপ সংঘর্ষে নিহত ২

প্রকাশ: ০৫ জুলাই ২০২৪, ০৫:২৩ পিএম
আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২৪, ০৫:২৩ পিএম
ফরিদপুরে বাস-পিকআপ সংঘর্ষে নিহত ২
ছবি: খবরের কাগজ (ভিডিও থেকে নেওয়া)

ফরিদপুর-ঢাকা মহাসড়কের ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার যুদুনন্দি এলাকায় বাস-পিকআপের মুখোমুখি সংঘর্ষে দুইজন নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছে‌ চারজন। নিহতরা হলেন- পিকআপের ড্রাইভার ও হেলপার। তবে তাদের নাম পরিচয় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত জানা যায়নি। 

শুক্রবার (৫ জুলাই) বিকেল তিনটার দিকে এই ঘটনা ঘটে।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, বিকেল তিনটার দিকে ফরিদপুরের দিকে যাওয়ার পথে গোল্ডেন লাইনের একটি পরিবহনের সঙ্গে ভাঙ্গাগামী একটি পিকআপের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই পিকআপের ড্রাইভার ও হেলপার নিহত হয়। আর এই ঘটনায় বাসের আরও চার যাত্রী আহত হয়েছে। তাদেরকে উদ্ধার করে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়েছে। উদ্ধারকাজ অংশ নেয় ফায়ার সার্ভিস, হাইওয়ে পুলিশ ও নগরকান্দা থানা পুলিশ। সড়ক দুর্ঘটনার পরে ওই এলাকায় যানজট তৈরি হলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

সঞ্জিব দাস/এমএ/