মধ্যস্থতাকারীদের কাছে নতুন যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব দিয়েছে ফিলিস্তিনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস।
ওই প্রস্তাবে হামাসের হাতে থাকা ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি দেওয়ার বিষয়টি উল্লেখ রয়েছে। ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ জানিয়েছে, তারা চুক্তি খতিয়ে দেখছে।
এদিকে ইসরায়েলি জিম্মিদের পরিবার বলছে, তাদের সরকার হামাসের চুক্তি মেনে না নিলে লাখো মানুষ সেটির প্রতিবাদ করবে।
মোসাদ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, নিজেদের উত্তর মধ্যস্থতাকারীদের জানাবে তারা।
আল-জাজিরার প্রতিবেদন বলছে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সম্ভাব্য ওই যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিয়ে নিরাপত্তা মন্ত্রিসভার সঙ্গে আলোচনা করবেন। নেতানিয়াহু সরকারের এক সূত্র জানায়, মন্ত্রিসভা বৈঠকের আগে নেতানিয়াহু তার দলের সঙ্গেও পরামর্শ করবেন।
হামাস জানিয়েছে, এটি সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তির একটি চুক্তি। কাতার, মিসর ও তুরস্কের মধ্যস্থতাকারীদের নিজেদের পরিকল্পনা জানিয়েছে তারা।
সম্প্রচারমাধ্যম চ্যানেল ১২ জানিয়েছে, হামাসের হাতে থাকা জিম্মিদের পরিবারের কিছু সদস্যের সঙ্গে কথা বলেছেন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইয়োয়াভ গ্যালান্ট। স্বজনদের ফিরিয়ে আনতে অন্যান্য চুক্তির চেয়েও ফলপ্রসূ একটি চুক্তি হতে যাচ্ছে বলে জিম্মি পরিবারের সদস্যদের আশ্বস্ত করেছেন গ্যালান্ট।
ইসরায়েলের সম্প্রচার মাধ্যম কান-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুদ্ধবিরতি আলোচনায় অগ্রগতি নিয়ে বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) শেষভাগের দিকে নেতানিয়াহু ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ফোনালাপ হওয়ার কথা রয়েছে।
নতুন করে যুদ্ধ বিরতির আলোচনাটি এমন একটি সময়ে সামনে আসল যখন গাজার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর দক্ষিণ খান ইউনিসে ইসরায়েল নির্বিচারে হামলা চালাচ্ছে। যেখানে আনুমানিক ২ লাখ ৫০ হাজার ফিলিস্তিনিকে বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য করেছে ইসরায়েল।
বৃহস্পতিবার খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালের কাছে একটি পাঁচতলা ভবনে ইসরায়েলি হামলায় সাত ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এক সতর্কবার্তায় জানিয়েছে, মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালের বিদ্যুৎ জেনারেটরগুলো জ্বালানির অভাবে অকার্যকর হয়ে যাবে। গাজায় ইউরোপীয় হাসপাতালের কার্যক্রম বন্ধ করার পর নাসের হাসপাতাল একমাত্র হাসপাতাল যা খান ইউনিস ও রাফায় হামলায় আহতদের চিকিৎসাসেবা দিচ্ছে। মন্ত্রণালয়টি হাসপাতালের জেনারেটরগুলো পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় জ্বালানি সরবরাহ করতে সমস্ত আন্তর্জাতিক ও মানবিক সংস্থাগুলোকে জরুরিভাবে হস্তক্ষেপ করার জন্য অনুরোধ করেছে।
উত্তেজনা বাড়ছে ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে
গত বুধবার (৩ জুলাই) দক্ষিণ লেবাননে ইসরায়েলি বিমান হামলায় হিজবুল্লাহ কমান্ডার মোহাম্মদ নাসের নিহত হয়েছেন। ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে উত্তেজনা আরও বেড়েছে।
বৃহস্পতিবার লেবানন থেকে ইসরায়েলি সামরিক অবস্থান লক্ষ্য করে ২০০টিরও বেশি রকেট নিক্ষেপ করেছে হিজবুল্লাহ। ক্রমাগত গোলাবর্ষণ ও ড্রোন হামলার মুখে উত্তর ইসরায়েলের শহর ও জনবসতিতে ২০ মিনিটের মধ্যে অন্তত সাতবার সাইরেন বাজানো হয়। ইসরায়েলি সিভিল ডিফেন্স সার্ভিস এখন পর্যন্ত কোনো আহত বা ক্ষয়ক্ষতির খবর জানায়নি।
ইসরায়েলি অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস ম্যাগেন ডেভিড অ্যাডম জানিয়েছে, লেবানন থেকে রকেট হামলায় সতর্কতামূলক সাইরেনের পরে দুই নারীকে হালকা আহত অবস্থায় উত্তর ইসরায়েলের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সূত্র: আল-জাজিরা