ঢাকা ১৪ আষাঢ় ১৪৩১, শুক্রবার, ২৮ জুন ২০২৪

চিয়া সিডের বাজারজাতকরণ নিশ্চিত করুন

প্রকাশ: ০৯ জুন ২০২৪, ১১:১১ এএম
আপডেট: ০৯ জুন ২০২৪, ১১:১১ এএম
চিয়া সিডের বাজারজাতকরণ নিশ্চিত করুন

জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে চিয়া সিড চাষ। কিন্তু বাজারজাতকরণে রয়েছে চাষিদের দুশ্চিন্তা। রাজশাহী অঞ্চলে চিয়া সিডের চাষ ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। এ অঞ্চলে প্রথম পরীক্ষামূলক শুরু হলেও ক্রমেই বাড়ছে এ শস্যের চাষ। তবে এ শস্য উৎপাদন করার পর বাজারজাতকরণকে প্রধান সমস্যা হিসেবে উল্লেখ করেছেন চাষিরা। উৎপাদিত পণ্যের বাজারজাতকরণ নিশ্চিত করা সম্ভব হলে চিয়া সিড চাষে কৃষকরা আরও আগ্রহী হবেন বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, চিয়া সিড মধ্য আমেরিকার একটি উদ্ভিদ। পুদিনার একটি প্রজাতি। বিভিন্ন পোষক পদার্থের উপস্থিতির জন্য একে সুপার ফুড বলা হয়। এটি বেলে দো-আঁশ মাটিতে ভালো জন্মে। নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে চিয়া সিড বপন করতে হয়। মার্চের শেষ থেকে এপ্রিলের মধ্যে ফলন ঘরে তোলা হয়। ভালো ফলন পেতে বেশি ব্যবহার করতে হয় জৈবসার। প্রতি বিঘা জমিতে সাড়ে তিন থেকে চার হাজার টাকা খরচে চিয়া সিড উৎপাদন হয় ৭০ থেকে ৮০ কেজি। প্রতি কেজি বীজ বিক্রি হয় ৮৫০ থেকে ১ হাজার টাকার মধ্যে। 

কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, ২০২১-২২ মৌসুমে পরীক্ষামূলকভাবে রাজশাহীর বাঘা উপজেলার মাত্র পাঁচ শতক জমিতে চিয়া সিডের চাষ হয়। এরপর ২০২২-২৩ মৌসুমে রাজশাহীর বিভিন্ন এলাকায় ৭ হেক্টর জমিতে ৩ দশমিক ২৯ টন চিয়া সিড উৎপাদন হয়। ২০২৩-২৪ মৌসুমে ১৩ দশমিক ৫ হেক্টর জমিতে ৮ টন চিয়া সিড উৎপাদন হয়। 

এর মধ্যে বাঘা উপজেলায় ৭ দশমিক ৩ হেক্টর জমিতে, তানোর উপজেলায় ৩ হেক্টর জমিতে, চারঘাট উপজেলায় ২ হেক্টর জমিতে, বাগমারা উপজেলায় ১ হেক্টর জমিতে এবং জেলার অন্য এলাকায় দশমিক ২ হেক্টর জমিতে এই শস্যের আবাদ করা হয়। রাজশাহীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় চাষ হওয়া পুষ্টি ও ঔষধিগুণসম্পন্ন এই ফসল কয়েক বছরের মধ্যে বিদেশে রপ্তানি সম্ভব বলে মনে করছে কৃষি বিভাগ এবং এই ফসল রপ্তানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব। 

চিয়া সিডচাষিদের মতে, প্রথম বছর পরীক্ষামূলকভাবে চাষ করে কম খরচে ভালো ফলন পেয়েছেন। দাম ও চাহিদা অনেক বেশি ছিল। তাই এবার টানা তৃতীয়বারের মতো তারা চাষ করেছেন। তারা বলছেন, এই ফসল চাষ খুবই সহজ, কীটনাশক লাগে না। 

এ ছাড়া ১ বিঘা জমিতে প্রয়োজন হয় মাত্র ৩০০ গ্রাম বীজের। অথচ ফলন হয় কমপক্ষে ৭০ কেজি। কৃষকরা আরও বলেছেন, ১ বিঘা জমিতে চিয়া সিড চাষে সাড়ে ৩ হাজার থেকে ৪ হাজার টাকা খরচ করে মাত্র ৯০ দিনে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা আয় করা সম্ভব, যা অন্য কোনো ফসল উৎপাদনে সম্ভব হয় না। রাজশাহী অঞ্চলের কৃষকরা শুরুতেই ভালো ফলন ও কম খরচে বেশি লাভবান হওয়ায় চিয়া সিড চাষে ঝুঁকছেন। বর্তমানে রাজশাহীজুড়ে এ ফসলের চাষাবাদ শুরু হয়েছে। 

কৃষিসংশ্লিষ্টরা বলছেন, চিয়া সিড বিক্রি কৃষকদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।  কারণ চিয়া সিড একটি নির্দিষ্ট শ্রেণির ব্যক্তিরা খেয়ে থাকেন। তারা সুপারশপ বা বড় বড় দোকান থেকে ব্র্যান্ড দেখে এগুলো কেনেন। সে ক্ষেত্রে বিদেশ থেকে আমদানি করা আকর্ষণীয় বোতলজাত বীজ বেশি বিক্রি হয়। কিন্তু সাধারণ কৃষকের পক্ষে বোতলজাত বা প্যাকেটজাত করে এগুলো বিক্রি করা সম্ভব নয়। তাই সাধারণ কৃষকদের পক্ষে চিয়া সিড বাজারজাতকরণ নিশ্চিত করা জটিল হয়ে পড়ে। 

দেশে উৎপাদিত চিয়া সিড শস্যের চাহিদা বৃদ্ধিকে ইতিবাচকভাবে দেখছেন সংশ্লিষ্টরা। সরকার এ শস্য উৎপাদন ও বাজারজাতকরণে কৃষকদের আরও উৎসাহিত করতে কৃষি প্রণোদনা দিয়ে সহায়তা করতে পারে। দেশের বড় বড় কোম্পানি যাতে কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি চিয়া সিড কিনতে পারে সে ব্যবস্থা রাখতে হবে। আমদানিনির্ভরতা কমিয়ে দেশের ভেতরে এই শস্য উৎপাদনে সরকারকে তৎপর হতে হবে। 

আমদানি বন্ধ করতে শুল্ককর বাড়িয়ে দিতে হবে। তা হলে দেশে চাহিদা অনুযায়ী উৎপাদিত শস্যটির ন্যায্যমূল্য পাবেন কৃষকরা। চাহিদা অনুযায়ী উৎপাদন বাড়লে শস্যটি বাজারজাতকরণেও দুশ্চিন্তা কেটে যাবে। কৃষকদের পাশাপাশি অর্থনৈতিকভাবে দেশও লাভবান হবে।

নদীদূষণ রোধ প্রকল্পের কাজে গতি আনুন

প্রকাশ: ২৮ জুন ২০২৪, ১১:২৭ এএম
আপডেট: ২৮ জুন ২০২৪, ১১:২৭ এএম
নদীদূষণ রোধ প্রকল্পের কাজে গতি আনুন

বুড়িগঙ্গাসহ চার নদীর দূষণ রোধ ও সৌন্দর্যবর্ধন প্রকল্প গ্রহণ করেছে সরকার। ফিজিবিলিটি স্টাডি বা সম্ভাব্যতা সমীক্ষা করার পর নদীর চারপাশে বসবাসরত জনগণের জীবনযাত্রার মান ও পরিবেশগত উন্নয়নের দিক বিবেচনায় নিয়ে প্রকল্প এলাকা নির্বাচন করা হয়েছে। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অধীনে প্রকল্পটির মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা চলতি বছরের ৩০ জুন। ইতোমধ্যে দুবার সংশোধন করে ব্যয় বাড়ানো হয়।

কিন্তু তাতেও কাজ শেষ হয়নি। এখন তৃতীয়বার সংশোধন করে ৮৪৮ কোটি টাকার প্রকল্পটির ব্যয় বাড়িয়ে ১ হাজার ২৭৬ কোটি টাকায় উন্নীত করা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে খরচ বাড়ছে ৩৪ শতাংশ। সময় বাড়ানো হচ্ছে আরও এক বছর, অর্থাৎ ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত। 

বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, শীতলক্ষ্যা ও বালু নদীর দূষণরোধে প্রকল্পটি নেওয়া হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ। তৃতীয়বার সংশোধনের জন্য প্রকল্পটি আগামী একনেক সভায় অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। পরিকল্পনা কমিশন ও নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সূত্রে জানা যায়, বুড়িগঙ্গাসহ চার নদীর তীর অবৈধ দখল রোধ করা, নদীর পানি দূষণ কমানো, সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য সরকার ২০১৮ সালের ২২ মে এই প্রকল্প প্রথমবারের মতো অনুমোদন দেয়। 

তখন খরচ ধরা হয়েছিল ৮৪৮ কোটি টাকা। বাস্তবায়নকাল ধরা হয়েছিল ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত। কাজ ঠিকমতো না হওয়ায় ২০২১ সালের ৭ সেপ্টেম্বর প্রথম সংশোধন করা হয়। তখন সময় বাড়ানো হয় এক বছর, অর্থাৎ ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত। আর খরচ বাড়িয়ে ১ হাজার ১৮১ কোটি টাকায় আনা হয়। এরপর আবারও সংশোধন করে সময় বাড়ানো হয় এক বছর। অর্থাৎ ২০২৪ সালের জুনে শেষ করতে বলা হয়। 

কাজ দ্রুত শেষ করতে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে ৩০০ কোটি টাকা বরাদ্দও রাখা হয়েছিল। কিন্তু তাতেও কাজ হয়নি। আবার সময় বাড়ানো হয়েছে এক বছর। অর্থাৎ ২০২৫ সালের জুনে শেষ করার জন্য সংশোধনের প্রস্তাব করা হয়েছে। সঙ্গে খরচও বাড়িয়ে ১ হাজার ২৭৫ কোটি ৯৫ লাখ টাকা, অর্থাৎ মূল খরচ থেকে ৪২৮ কোটি টাকা বা ৩৪ শতাংশ বাড়ানো হচ্ছে। 

এ পর্যন্ত দৃশ্যমান হয়েছে ২৫ কিলোমিটার। যা ঢাকার বুড়িগঙ্গা ও তুরাগকে করেছে দৃষ্টিনন্দন ও পর্যটনবান্ধব। ২০১৯ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত অবৈধ দখলমুক্ত করা ও নদী রক্ষায় শক্তিশালী অভিযানে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল প্রায় ১১ হাজার অবৈধ স্থাপনা। উদ্ধার করা হয়েছে নদীর দখল করা প্রায় ৩৫০ একর জায়গা। 

ঢাকা, টঙ্গী ও নারায়ণগঞ্জ নদীবন্দর এলাকায় শেষ হয়েছে তিনটি পরিবেশবান্ধব ইকোপার্ক নির্মাণের কাজ, যা নদীতীরে আসা মানুষকে সবুজ পরিবেশ পেতে সহায়তা করছে। সব মিলিয়ে রাজধানীর চারপাশের নদীতীর রক্ষায় অগ্রগতি হয়েছে ৭৫ শতাংশ। 

নদীমাতৃক বাংলাদেশে অবৈধভাবে দখল হয়ে যাচ্ছে নদীগুলো। বিশেষ করে রাজধানীর আশপাশের নদ-নদী ও খাল-বিলগুলো দখল হচ্ছে, সেই সঙ্গে মনুষ্যসৃষ্ট কারণেও পানির দূষণ বাড়ছে। নদীর তীরবর্তী সৌন্দর্য ও প্রায় হারাতে বসেছে। 

এসব নদীকে বাঁচাতে সরকারকে কার্যকর ভূমিকা পালন করতে হবে। নদীর দূষণরোধ ও সৌন্দর্যবর্ধন কাজে যেসব প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে, সেসব প্রকল্প বাস্তবায়ন কাজের গতিশীলতা আনতে হবে। সময় ও প্রকল্প ব্যয় দুটিই কমিয়ে আনতে হবে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এ ব্যাপারে আরও উদ্যোগী হয়ে কাজ করতে হবে।

চীন-ভারত প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য বাস্তবসম্মত

প্রকাশ: ২৭ জুন ২০২৪, ১০:১০ এএম
আপডেট: ২৭ জুন ২০২৪, ১০:১০ এএম
চীন-ভারত প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য বাস্তবসম্মত

ভারত সফরের অভিজ্ঞতা জানাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত মঙ্গলবার গণভবনে সংবাদ সম্মেলন করেন। প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যের শুরুতেই ভারতে রাষ্ট্রীয় সফরের অর্জনের কথা তুলে ধরেন। এ সম্মেলনে তিনি সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। চীন ও ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দুই দেশের সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষায় ভারসাম্য রেখেছেন।

দুই দেশই বাংলাদেশের বন্ধুপ্রতিম দেশ। ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। স্বাধীনতাযুদ্ধে ভারত মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে নিজেদের রক্ত ঢেলে দিয়ে এ দেশ স্বাধীন করেছে। মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ ও ১ কোটি বাঙালিকে আশ্রয় দিয়েছে। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের পাশে থেকে নানাভাবে সাহায্য-সহযোগিতা করেছে। 

দল-মতনির্বিশেষে ভারতের প্রতিটি রাজনৈতিক দল ও নেতার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুসম্পর্ক রয়েছে। ভারতকে দুঃসময়ের বন্ধু হিসেবে উল্লেখ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। একই সঙ্গে বলেছেন, চীন থেকে শেখার আছে। তিনি সবার সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে দেশের উন্নয়নে কাজ করার কথা বলেছেন। 

ভারত ও চীনের সঙ্গে সম্পর্কের ভারসাম্য বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের উন্নয়নে কার সঙ্গে কতটুকু বন্ধুত্ব দরকার, সেটা করে যাচ্ছে সরকার। সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশকে পরিচালনা করছেন তারই পিতার দেখানো পথ অনুসরণ করে। দেশের উন্নয়নে তিনি বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রেখে চলেছেন। তার সুচিন্তিত ও গতিশীল নেতৃত্বের কারণে দেশ আজ অনেক অগ্রসরমাণ। 

এলডিসি থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে শামিল হওয়ার প্রচেষ্টায় রয়েছে এ দেশ। কূটনীতিতেও ইতিবাচক কৌশল অবলম্বন করে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ৮ জুলাই তিন দিনের সফরে চীনের রাজধানী বেইজিং যাবেন। মাত্র কয়েক দিন আগে তিনি ভারত সফর করে এসেছেন। কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, ঢাকার সঙ্গে বেইজিংয়ের সম্পর্ক নিয়ে নিশ্চিন্ত হতে চায় নয়াদিল্লি। এ অবস্থায় সফরকালে নয়াদিল্লি-বেইজিংয়ের মধ্যে ভারসাম্য আনার সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা রয়েছে ঢাকার কর্মকর্তাদের মধ্যে। 

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা বলছেন, চীন ও ভারত উভয় দেশই বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তবে দুটি দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক দুই ধরনের। বাংলাদেশের তিন দিক ঘিরে রয়েছে ভারত। অন্যদিকে সহযোগিতা ও ভূ-রাজনীতির মতো বিষয়গুলো নিয়ে একধরনের সম্পর্ক বজায় রেখে চলেছে ঢাকা। 

এ ছাড়া বাংলাদেশকে ঘিরে ভারত-চীনের মধ্যে রয়েছে তীব্র প্রতিযোগিতা। ভারত চায় ইন্দো-প্যাসিফিকে বাংলাদেশ তার সঙ্গে থাকুক। চীনের প্রত্যাশাও বাংলাদেশ তার সঙ্গে থাকবে। প্রধানমন্ত্রীর চীন সফরের অপেক্ষায় রয়েছে। তবে সফরটি অত্যন্ত ফলপ্রসূ হবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। 

চীনে নিযুক্ত বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত মুন্সি ফয়েজ আহমদ খবরের কাগজকে বলেন, চীন-ভারত উভয় দেশের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভূ-রাজনৈতিক গুরুত্ব আছে। বাংলাদেশ ভারত ও চীনের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রেখেই চলছে। উভয় পক্ষের সংবেদনশীলতা ও স্পর্শকাতরতা বিবেচনায় নিয়ে ঢাকাকে এগোতে হবে। 

তিস্তা নদীর সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনার মহাপরিকল্পনা নিয়ে চীন ও ভারতের মধ্যে যাদের প্রস্তাব বেশি লাভবান হবে, সেটাই বাংলাদেশ গ্রহণ করবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সংবাদ সম্মেলনে চীন-ভারত প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য বাস্তবসম্মত বলে বিশ্লেষকরা মনে করেন।  প্রত্যাশা করছি, বাংলাদেশ সরকার দূরদর্শী চিন্তা দিয়ে এ দেশের মানুষের জন্য যেটি কল্যাণকর সেটিই করবে। প্রধানমন্ত্রী তার কূটনৈতিক কৌশল দিয়ে ইতোমধ্যে অনেক সমস্যার সমাধান করেছেন। ভবিষ্যতেও করবেন, এটাই প্রত্যাশা।

সর্বজনীন পেনশন স্কিমের বিস্তৃতি বাড়ান

প্রকাশ: ২৬ জুন ২০২৪, ১১:১৭ এএম
আপডেট: ২৬ জুন ২০২৪, ১১:১৭ এএম
সর্বজনীন পেনশন স্কিমের বিস্তৃতি বাড়ান

প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ জনকল্যাণকর কর্মসূচির সফল বাস্তবায়নে সর্বজনীন পেনশন স্কিমের ইতিবাচক সারা মিলছে। সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে সামর্থ্যবান সবাইকে পেনশনের আওতায় আনা বর্তমান সরকারের নির্বাচনি অঙ্গীকার। তারই অংশ হিসেবে বয়স্ক জনগোষ্ঠীকে একটি টেকসই ও সুসংগঠিত সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে ২০২৩ সালের ১৭ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী সর্বজনীন পেনশন স্কিমের উদ্বোধন করেন। সর্বজনীন পেনশনের আওতায় গ্রাহকসংখ্যা ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। 

জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের তথ্যমতে, কার্যক্রম শুরুর ১০ মাসের মধ্যে নিবন্ধন সংখ্যা ৩ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, উদ্বোধনের পর থেকেই জনকল্যাণকর এ কর্মসূচিতে মানুষের উল্লেখযোগ্য আগ্রহ পরিলক্ষিত হচ্ছে। মাঠ প্রশাসনকে কার্যকরভাবে সম্পৃক্ত করার ফলে সম্প্রতি সর্বজনীন পেনশন স্কিমে নিবন্ধন সংখ্যা উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে ৩ লাখ নিবন্ধনের এ মাইলফলক অর্জিত হয়েছে এবং সাবস্ক্রিপশন বাবদ মোট ৮৬ কোটি ৬৮ লাখ ৬৮ হাজার ৫০০ টাকা জমা হয়েছে। 

এরই মধ্যে নিবন্ধনকারীদের অর্থ থেকে সরকারি ট্রেজারি বন্ডে ৬২ কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে। নিবন্ধন ও মাসিক জমা পরিষদ সেবা জনগণের জন্য অধিকতর সহজলভ্য হবে। এ প্রক্রিয়ায় সর্বজনীন পেনশন স্কিমে জনগণের অংশগ্রহণের হার আরও দ্রুততর হবে, যা প্রধানমন্ত্রীর এ বিশেষ জনকল্যাণ কর্মসূচির সফল বাস্তবায়নে সহায়ক হবে বলে জানিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। 
প্রস্তাবিত বাজেটে যারা নতুন সরকারি চাকরিতে আসবেন, তাদের সর্বজনীন পেনশনের আওতায় আনার বিষয়টি বাধ্যতামূলক করা হয়। 

বলা হয়, যারা ২০২৫ সালের ১ জুলাই থেকে সরকারি চাকরিতে যোগদান করবেন, তাদের সবাইকে এই স্কিমের আওতায় আনা হবে। এর আগে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়সহ স্বায়ত্তশাসিত, আধা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে যারা চলতি বছরের ১ জুলাই থেকে যোগদান করবেন, তাদের সর্বজনীন পেনশন স্কিমের আওতায় আনার বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। যদিও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এই উদ্যোগের বিরোধিতা করছে।

বর্তমানে প্রবাস, প্রগতি, সুরক্ষা ও সমতা নামের চারটি স্কিমের নিবন্ধনের সুবিধা চালু রয়েছে। এ চারটি স্কিমের মধ্যে সমতা স্কিমে ২ লাখ ২৪ হাজার ১৬৪ জন, প্রগতি স্কিমে ২১ হাজার ২৯৪, সুরক্ষা স্কিমে ৫৬ হাজার ৯১৯ এবং প্রবাসী স্কিমে ৭৯৯ জন নিবন্ধন সম্পন্ন করেছেন। এতে চার স্কিমে নিবন্ধন সম্পন্ন করেছেন ৩ লাখ ৩ হাজার ১৭৬ জন। 

সূত্রমতে, এরই মধ্যে ৮৭টি এনজিও প্রগতি স্কিমে নিবন্ধন হয়ে তাদের কর্মচারীদের অনুকূলে সাবস্ক্রিপশন প্রদান করছে। পঞ্চম স্কিম হিসেবে প্রত্যয় নামে নতুন স্কিম চালু করা হচ্ছে, যা সব স্বশাসিত, স্বায়ত্তশাসিত ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারী, যারা ১ জুলাই ২০২৪ থেকে উল্লিখিত প্রতিষ্ঠানে নতুন যোগদান করবেন তাদের ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলকভাবে কার্যকর হবে।

বর্তমানে দুটি সরকারি ও দুটি বেসরকারি ব্যাংক এবং একটি মোবাইল ফাইন্যান্সিং সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান সর্বজনীন পেনশন স্কিমে নিবন্ধনসহ মাসিক জমা আদায়ে সম্পৃক্ত আছে। আরও চারটি বেসরকারি ব্যাংক ও একটি মোবাইল ফাইন্যান্সিং প্রতিষ্ঠান খুব শিগগির কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত হবে।

সর্বজনীন পেনশন স্কিমে সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছতে হলে জাতীয় পেনশন প্রচার কর্তৃপক্ষকে প্রচারণাসহ বিভিন্ন কর্মসূচি জোরালোভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে। সব শ্রেণির মানুষ যাতে এর সুফল ভোগ করতে পারে, সে জন্য এই স্কিমের বিস্তৃতি বাড়াতে হবে। সর্বজনীন পেনশন স্কিমে নিবন্ধনসহ মাসিক জমা আদায়ের ব্যাংকিং সেবার আওতা আরও বৃদ্ধির উদ্যোগ নিতে হবে। নিবন্ধন ও মাসিক জমা পরিশোধ সেবা জনগণের জন্য সহজলভ্য করতে হবে। বিভাগ, জেলা, উপজেলা পর্যায়ে সর্বজনীন পেনশন মেলা ও কর্মশালার আয়োজন করে জনগণের অংশগ্রহণ বাড়াতে উদ্যোগ নিতে হবে।

পোশাকশিল্পের টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হবে

প্রকাশ: ২৫ জুন ২০২৪, ১০:৩৬ এএম
আপডেট: ২৫ জুন ২০২৪, ১০:৩৬ এএম
পোশাকশিল্পের টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হবে

বাংলাদেশের পোশাকশিল্প অনেক দূর এগিয়েছে। দেশের এই শিল্পটি তার অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। সরকারি-বেসরকারি এবং সব অংশীজন এ লক্ষ্য অর্জনে দিনরাত পরিশ্রম করছে। বাংলাদেশে নিযুক্ত জার্মান দূতাবাসের ডেপুটি হেড অব মিশন জ্যান জানোস্কি  বলেন, টেকসই উৎপাদনে বিনিয়োগ করা শুধু একটি দায়িত্বশীল ব্যবসায়িক সিদ্ধান্ত নয় বরং এটি একটি কৌশলগত সিদ্ধান্ত, যা টেকসই উৎপাদনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থানকে জার্মানি ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়নসহ বৈশ্বিক বাজারে আরও শক্তিশালী করতে পারে। 

তিনি বলেন, বাংলাদেশের তৈরি পোশাকশিল্পে আরও মনোনিবেশ করতে হবে। সম্প্রতি রাজধানীর রেডিসন ব্লু ওয়াটার গার্ডেনে দ্বিতীয় বাংলাদেশ সার্কুলার ইকোনমি সামিট এ সম্পর্কে একটি সম্মেলনের আয়োজন করে। সম্মেলনে বক্তারা পোশাকশিল্প ও বস্ত্র খাত নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরেন। বাংলাদেশ বর্তমানে পোশাক খাতে সুতার জন্য ব্যাপকভাবে আমদানির ওপর নির্ভরশীল। ২০১৯ সালে দেশটি ১৬ লাখ ৩০ হাজার টন সুতা আমদানি করে; যার বাজারমূল্য প্রায় সাড়ে ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। তবে যদি দেশের সুতাবর্জ্য শতভাগ রিসাইকেল করা সম্ভব হয় তাহলে সুতা আমদানি প্রায় ১৫ শতাংশ কমে আসবে। এতে করে সুতা আমদানিতে ব্যয় হওয়া ৫০ কোটি মার্কিন ডলার বাঁচাতে পারে। 

দেশের তৈরি পোশাকের ব্যবহৃত সুতার বিকল্প উৎস হয়ে উঠতে পারে রিসাইক্লিং শিল্প। তুলাবর্জ্য রিসাইকেলের মাধ্যমে সুতা আমদানি ১৫ শতাংশ কমিয়ে আনা সম্ভব। এতে ৫০ কোটি ডলার সাশ্রয় হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এ শিল্পের মাধ্যমে একদিকে যেমন দেশের সুতা আমদানি কমবে, তেমনি পরিবেশের ক্ষতি রোধ করাও সম্ভব হবে বলে মনে করেন তারা। 

তথ্য মতে, বাংলাদেশে ২০০টিরও বেশি সনদপ্রাপ্ত সবুজ পোশাক কারখানা রয়েছে এবং আরও ৫০০টি কারখানা সনদ পাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে। বাংলাদেশ সার্কুলারিটি ও টেকসইয়ের ক্ষেত্রে অনেক দূর এগিয়েছে। পোশাক উদ্যোক্তারা টেকসই অনুশীলনগুলো গ্রহণ করছেন। তারা অনেক চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করতে সক্ষম হয়েছেন।

বাংলাদেশের পোশাকশিল্প একটি সম্ভাবনাময় খাত। এ খাতের স্বচ্ছতা আনয়নের লক্ষ্যে আরও কাজ করতে হবে। দেশ এবং বিদেশের বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে অভিজ্ঞতা বিনিময়ের মাধ্যমে সার্কুলার ইকোনমির সম্ভাবনাকে আরও কাজে লাগাতে হবে। যা টেকসই  উৎপাদনের ক্ষেত্রে আরও সহায়ক হবে। বাংলাদেশের সে ধরনের কর্মপরিবেশ রয়েছে। ব্যবসায়ী উদ্যোক্তরাও সেটাই ভাবছেন। তারা বলছেন, বাংলাদেশ টেকসই ও সার্কুলারিটিতে শীর্ষস্থান অর্জনকারী হয়ে উঠবে। 

সুতা আমদানি কমিয়ে আনতে হবে। দেশীয় সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করতে পারলে পোশাক ও বস্ত্র খাতের উন্নয়ন আশাব্যঞ্জক হবে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্যও এ শিল্প গুরুত্বপূর্ণ। এ জন্য তৈরি পোশাক খাতের দিকে আরও মনোযোগ দেওয়া উচিত সরকারকে। দেশের পোশাকশিল্পে নিরাপত্তার ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নতি হয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এ দেশের অনেক কারখানা সর্বোচ্চ মান বজায় রেখে কাজ করছে। ভবিষ্যতে মান যেন আরও টেকসই হয় সে লক্ষ্যে কাজ করতে হবে।

বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক নতুন উচ্চতায়

প্রকাশ: ২৪ জুন ২০২৪, ১০:৫৬ এএম
আপডেট: ২৪ জুন ২০২৪, ১০:৫৬ এএম
বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক নতুন উচ্চতায়

প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সম্প্রতি দুই দেশেই নির্বাচন হয়েছে। নির্বাচনের পর দুই দেশই নতুন করে সহযোগিতার বিষয়ে একমত হয়েছে। গত শনিবার দিল্লির হায়দরাবাদ হাউসে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হয়। বৈঠক-পরবর্তী দুটি চুক্তি, পাঁচটি নতুন সমঝোতা, তিনটি নবায়নসহ মোট ১০ চুক্তি-সমঝোতা স্মারক সই করেছে দুই দেশ। এ ছাড়া দুই দেশের মধ্যে ১৩টি ঘোষণা উঠে এসেছে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে এগুলো প্রকাশ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, উভয় দেশই একটি শান্তিপূর্ণ ও সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের দিকে আমাদের পথ দেখানোর জন্য রূপকল্প ঘোষণা অনুমোদন করেছে। আমরা টেকসই ভবিষ্যতের জন্য ডিজিটাল অংশীদারি এবং সবুজ অংশীদারিবিষয়ক দুটি রূপকল্প সামনে রেখে কাজ করতে দুই পক্ষই সম্মত হয়েছি। বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক দিন দিন বিকশিত হচ্ছে বিভিন্ন অগ্রসরমাণ কাজের মাধ্যমে। রূপকল্প ২০৪১-এর মাধ্যমে স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা এবং বিকশিত ভারত ২০৪৭ অনুসরণ করে উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় শরিক হয়েছে দুই দেশ। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, বাংলাদেশ আমাদের বৃহত্তম উন্নয়ন সঙ্গী। তাদের স্বার্থকে ভারত সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়। ২০২৪ সালের নির্বাচনের পর ভারতে প্রধানমন্ত্রীর এটি প্রথম দ্বিপক্ষীয় সফর। দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে উভয় দেশের স্বার্থে একটি টেকসই ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে ডিজিটাল এবং সবুজ অংশীদারির জন্য যৌথ দৃষ্টিভঙ্গিতে সম্মত হয়েছেন দুই দেশের সরকারপ্রধান। 

কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সমন্বয়ের মাধ্যমে নতুন উন্নয়নের পথে যাত্রা হবে দুই দেশের। যেখানে দুই দেশ একে অপরকে সহযোগিতা করবে। এবার মেরিটাইমে ফোকাস করা হয়েছে। ডিজিটাল পার্টনারশিপের কথাও বলা হয়েছে। সব মিলিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সফর ভালো হয়েছে। তিস্তা প্রকল্পে ভারতের যোগ নিয়ে অনেকেই বলার চেষ্টা করেছেন যে, এতে ঢাকার সঙ্গে বেইজিংয়ের টানাপোড়েন হতে পারে। আদতে বিষয়টি তেমন নয়। বাংলাদেশ যেখানে ভালো পাবে সেখানে যাবে। এতে কোনো অসুবিধা নেই। 

সাবেক রাষ্ট্রদূত মুন্সি ফয়েজ আহমদ খবরের কাগজকে বলেন, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের চুক্তি যা-ই হোক না কেন, তাতে যেন বাংলাদেশের স্বার্থটা আমরা ঠিকমতো রক্ষা করতে পারি। সেই বিষয়টা সব সময় মাথায় রাখতে হবে। আমাদের কাছে যেন স্বার্থ রক্ষা করাটাই মূল লক্ষ্য হয়। দুই দেশের সহযোগিতাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তিস্তা প্রকল্পে অর্থায়নে ভারত আগ্রহ দেখিয়েছে, এটা ইতিবাচক। 

ভারত বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় প্রতিবেশী, বিশ্বস্ত বন্ধু এবং আঞ্চলিক অংশীদার। সে হিসেবে দুই দেশের আন্তসম্পর্ক অনেক শক্তিশালী। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের মধ্য দিয়ে দুই দেশের সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় উন্নীত হয়েছে। এ সম্পর্ক আরও জোরদার করতে হবে। তিস্তা সমস্যার সুষ্ঠু সমাধান হওয়াটা জরুরি। এসব অমীমাংসিত বিষয়ের সমাধানমুখী চিন্তায় আগ্রহী হতে হবে। এটি নিয়ে জনমনে বেশ আকাঙ্ক্ষা রয়েছে। সীমান্ত হত্যা বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। দুই দেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও জোরদার করতে হবে। ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের সঙ্গে যোগাযোগ বিস্তৃত করতে হবে। টেকসই ভবিষ্যৎ নিশ্চিতে বাংলাদেশ-ভারত এগিয়ে যাক, সেটিই প্রত্যাশা।